ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বরাবরের অভ্যেস। যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ঠান্ডা মাথায় তিনি করতে সক্ষম। তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। কিন্তু তাকে আমল দিতে আর রাজিই নন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা শাসকদলের সুপ্রিমো। বরং শুভেন্দু পর্বে পুরোপুরি ইতি টেনে শুভেন্দুহীন দলের একুশের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দিলেন শুক্রবারই। সাংগঠনিক দায়িত্ববৃদ্ধি করলেন দলের শীর্ষ নেতাদের। সেইসঙ্গে পুরোদমে ভোটপ্রচারে নামছেন তিনি নিজেও। ৭ ডিসেম্বর থেকে টানা জেলা সফর শুরু করবেন বলে খবর।
মাঠে নেমে প্রচারের কাজটা আগেও যেমন করতেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও সেই একইভাবে করে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা লড়াই কিছুটা কঠিন শাসকদলের কাছে, তা বুঝেই এবার রণকৌশল চূড়ান্ত করে নিলেন তিনি। শুক্রবার নিজের বাড়িতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জরুরি বৈঠকে ডেকে একাধারে নিয়ে নিলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। প্রশাসনের পাশাপাশি দল কীভাবে এগোবে, তাও ঠিক করে দেন মমতা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির মতো শীর্ষ নেতাদের সংগঠনের কাজে আরও বেশি করে মন দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিও নির্দেশ তাঁর। কোথাও কোনও ঢিলেমি নয়, একুশের লড়াইয়ের দামামা বাজিয়ে একথাই সকলকে বারবার করে বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপির সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে মূল প্রতিপক্ষ ধরে নিয়েই এগোতে হবে বলে জানান তিনি।
পুজোর আগে সংগঠনে রদবদলের সময়েই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে খানিকটা দ্বিধায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁকে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও, একটা বিকল্প ব্যবস্থা ভাবা ছিল তাঁর। এবার সেই বিকল্পটিকেই সামনে এনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। জানা গিয়েছে, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের সংগঠনের দায়িত্ব আবার তিনি দিয়েছেন সুব্রত বক্সির উপর। জেলায় জেলায় অন্য যাঁদের যা দায়িত্ব ছিল, সেইমতো কাজ চলবে এখন। তাঁর পাশাপাশি নেতাদেরও জেলা সফর করতে হবে, কাছে থেকে বুঝতে হবে পরিস্থিতি। শুক্রবারের বৈঠকে এমনই কয়েকদফা কর্মসূচি ঠিক করে দিয়েছেম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, মালদহে দীর্ঘদিন দলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার তিনি মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই মালদহে তৃণমূলের কোর কমিটিকে জরুরি তলব করা হয়েছে কলকাতায়। মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল এবং জেলার দুই প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। শনিবার কলকাতায় নিজের দপ্তরে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। হয়ত শুভেন্দুর অনুপস্থিতিতে দলকে কীভাবে চলতে হবে, তার রূপরেখা ঠিক করে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, দফায় দফায় অন্যান্য জেলা নেতৃত্বকেও এই বার্তা দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.