ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একমাস পূরণ করল তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। যে এক মাসে সাড়া মিলল ওয়ান মিলিয়ন অর্থাৎ দশ লক্ষ। তাতে রয়েছে অভিযোগ। এসেছে ভূরি ভূরি পরামর্শ। কারও প্রশংসায় ভরে গিয়েছে মেসেজ বক্স। দরাজ গলায় যা নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার যার প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “রাজ্যের মানুষ ‘দিদিকে বলো’-তে যেভাবে সাড়া দিয়েছেন তাতে আমি অভিভূত। গত এক মাসে ১০ লক্ষ মানুষ আমাদের কাছে পৌঁছেছেন তাঁদের মূল্যবান পরামর্শ আর অভিযোগ নিয়ে। কেউ কেউ প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন।”
প্রথম ২৪ ঘণ্টাতেই সংখ্যাটা ছাড়িয়েছিল ১ লক্ষ। মূলত ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ১০০ দিন সময় দিয়ে অভিনব জনসংযোগের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছনোর নিদান দিয়েছিলেন জনপ্রতিনিধিদের। দপ্তরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রত্যেকটি সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে সেসব পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও চিকিৎসায় বাধা, কারও আর্থিক সমস্যা, কেউ কিডনি পাচ্ছেন না, কারও আবার হাসপাতালের শয্যা পেতে সমস্যা। যেগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল কর্নাটকের বন্যায় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার। হিসাবটা এরকম। ফোনে কথা বলেছেন ৮ লক্ষ ৬৩৫ জন। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে এসেছে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৭১৫টি বার্তা। যাদের মধ্যে শতাংশের হিসাব ধরলে অভিযোগ এসেছে ৪২ শতাংশ। পরামর্শ এসেছে ৩২ শতাংশ। ২২ শতাংশ এসেছে প্রশংসাসূচক বার্তা। বাকি ৪ শতাংশের মধ্যে অন্যান্য নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন মানুষ। অত্যন্ত সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন ২১৪ জন। তার মধ্যে ১৬১টি সমস্যার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমাধান করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানটি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “আমরা প্রত্যেকের মূল্যবান পরামর্শ গ্রহণ করেছি। অভিযোগ নথিবদ্ধ করেছি। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সব ক’টি অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ইতিমধ্যে রাজ্যজুড়ে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি প্রবল সাড়া ফেলেছে। কোথাও অভিযোগ, কোথাও অভিমান, কোথাও প্রবল সংকটের সামনে পড়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের। কার্যকরী হয়েছে রাতে কোনও কর্মীর বাড়িতে খাওয়া ও রাত্রিবাসের কর্মসূচিও। দলই জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ৫০০ জন নেতা এক হাজারেরও বেশি গ্রামে জনসংযোগ কর্মসূচি করেছেন। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এমন লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গিয়ে তৃণমূল তাদের অনেকটা জমি পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। যার প্রভাব ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হবে বলেই দাবি তৃণমূলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.