গ্রাফিক্স: সুলগ্না ঘোষ।
অর্ণব আইচ: ব্যাঙ্ক থেকে বেরতেই কেপমারদের হানা। দ্বিগুণ টাকা পাওয়ার লোভে পড়ে ৫০ হাজার টাকা খোয়ালেন ব্যাঙ্কের গ্রাহক। অবশেষে সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage) দেখে ভাগলপুরী কেপমার গ্যাংকে শনাক্ত করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। সেইমতো বিহারের (Bihar) ভাগলপুরে হানা গিয়ে কুখ্যাত কেপমার গ্যাংয়ের চারজনকে গ্রেপ্তার করলেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত চার কেপমারির অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনের নামই রাকেশ কুমার। বাকিরা সুরজ কুমার ও রাজাপ্রসাদ গুপ্তা। গত জানুয়ারির শেষের দিকে ভাগলপুর থেকে তারা কলকাতায় (Kolkata) আসে। তাদের মূল টার্গেট কলকাতার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও এটিএমের গ্রাহকরা, যাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে বের হচ্ছেন। সম্প্রতি মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট (Hare Street) এলাকার একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে বেরন এক ব্যক্তি। দুজন তাঁর সামনে একটি প্যাকেট নিয়ে এসে বলে, রাস্তা থেকে দুটি টাকার বান্ডিল কুড়িয়ে পেয়েছে। তাতে রয়েছে এক লক্ষ টাকা। কিন্তু এই টাকা কোথায় ও কীভাবে জমা দেবে, তারা বুঝতে পারছে না। তাই ওই ব্যক্তির সাহায্য চাইছে।
এসব শুনে তিনি প্রথমে গুরুত্ব দেননি। একটু এগিয়ে যাওয়ার পর আরও একজন এসে জানায় যে আগে দুজন এক লক্ষ টাকা কুড়িয়ে পেয়েছে। তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে কি না। ক্রমে চতুর্থ ব্যক্তিও এসে হাজির হয়। তাদের সঙ্গে প্রথম দুজনের কাছে যান ওই ব্যক্তি। তাদের কথা শুনে তিনি বিশ্বাস করেই নেন যে, তাদের কাছ রয়েছে এক লক্ষ টাকা নগদ। প্রথম দুজন ওই ব্যক্তিকে বলে, তিনি তাদের কাছে থাকা ওই এক লক্ষ টাকা নিতে পারেন। তার বদলে তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার বান্ডিল তারা চায়। দ্বিগুণ টাকা পাওয়ার লোভে ব্যাঙ্কের গ্রাহক নিজের টাকার বান্ডিল কেপমারদের হাতে তুলে দেন। তারা তাঁকে নিজেদের প্যাকেটটি দিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে।
তিনি কিছুটা দূরে গিয়ে ওই প্যাকেট দুটি খুলেই দেখেন, বান্ডিলের প্রথম ও শেষে রয়েছে একটি করে পাঁচশো টাকার নোট। মাঝখানে নোটের মাপমতোই কাটা সাদা কাগজ। এক লক্ষ টাকা পাওয়ার লোভে ৫০ হাজার টাকা খুইয়ে তিনি হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই মামলার তদন্তভার নেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ওই ব্যাঙ্কের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমে রাকেশ কুমারকে গোয়েন্দারা শনাক্ত করেন। সে আগেও ভাগলপুর থেকে কলকাতায় এসে তার লোকজন নিয়ে এই ধরনের কেপমারি করেছে। সেই সূত্র ধরে ভাগলপুরে তল্লাশি চালিয়ে রাকেশ কুমার ও তাকে জেরা করে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। লালবাজারে তাদের জেরা করে কটি কেপমারি তারা করেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.