অভিরূপ দাস: চোখের সামনে ঘটে গিয়েছে হাড় হিম করা ঘটনা। শনিবার দুপুরে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স (INK) ৮ তলার কার্নিশ থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন রোগী সুজিত অধিকারী। এই মুহূর্তে মাথা, বুকে গুরুতর চোট নিয়ে ITU-তে ভরতি তিনি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তিনি কার্নিশে ঝুলে বারবার আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। দমকল, পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাজার চেষ্টা করলেও উদ্ধার করতে পারেননি। শেষমেশ ঝাঁপই দিয়েছেন বছর তেত্রিশের যুবক।
কিন্তু কেন এত সময় ধরে কার্নিশেই ছিলেন তিনি? যেদিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার দিনই এমন একটা কাণ্ড ঘটালেন সুজিত? মানসিক অবসাদ নাকি আত্মহত্যার ছক? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে, মাত্র ২২ দিন আগেই স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ব্লাড ক্যানসার হয়েছিল। স্ত্রীকে হারানোর পর থেকে শোক, অবসাদে আচ্ছন্ন হন সুজিত। তার জন্যই এই ঘটনা কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃগী রোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সে ভরতি হয়েছিলেন লেকটাউনের (Lake Town) দক্ষিণদাঁড়ির বাসিন্দা সুজিত অধিকারী। দুই ছেলের বাবা সুজিত পেশায় লরিচালক। সম্প্রতি অবশ্য অন্যান্য গাড়িও চালাতেন। স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর ২২ দিন আগে প্রয়াত হন। পরিচিতরা জানাচ্ছেন, তারপর থেকে একেবারে চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন সুজিত। মনমরা হয়ে থাকতেন সারাক্ষণ। মাঝেমধ্যে মাথা ঘুরে পড়ে যেতেন। তবে বড় কোনও দুর্ঘটনা হয়নি তখনও পর্যন্ত।
সুজিতের অসুস্থতা বাড়তে থাকায় তাঁকে দিন দুই আগে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শনিবার হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (Discharge Certificate) পাওয়ার পর তাঁকে নিতে আসেন আত্মীয়রা। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার ঠিক আগেই সুজিত ওয়ার্ডের জানলা দিয়ে বেরিয়ে সোজা ৮ তলার কার্নিশে গিয়ে বসেন। আড়াই ঘণ্টা পর সেখান থেকে সটান ঝাঁপ দেন। তবে কি শারীরিক সুস্থতা কাটাতে পারলেও মনের অবসাদ থেকে মুক্তি পাননি সুজিত? আর তাই নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন? এখন সুজিত সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.