অর্ণব আইচ: মাও নেত্রী জয়িতার সঙ্গে সরাসরি যোগ রাখার অভিযোগ। দুই যুবককে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। মুর্শিদাবাদ থেকে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই দুই মাওবাদীর নাম প্রতীক ভৌমিক ও হাসিবুল শেখ।
কিছুদিন আগেই মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার নওদা এলাকা থেকে জেলা পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে জেলা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথিপত্র পাওয়া যায়। এসটিএফের (STF) সূত্র জানিয়েছে, প্রতীক ও হাসিবুলকে একসঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদ থেকে। তখনই প্রতীকের ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় কিছু নথিপত্র। এর মধ্যেই ময়দান থেকে পাওয়া একটি ব্যাগ থেকে প্রতীকদের কিছু নথি মেলে। সেই সূত্র ধরেই এসটিএফের গোয়েন্দারা মুর্শিদাবাদে পৌঁছন। তাঁরা জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে প্রতীকের কাছ থেকে পাওয়া ব্যাগটি পরীক্ষা করেন।
দেখা যায়, ওই ব্যাগের ভিতর ছিল মাওবাদী নেত্রী জয়িতা দাসের বিশ্ববিদ্যালয়ের শংসাপত্র। ছিল জয়িতার অন্য বেশ কিছু নথিও। সেই সূত্র ধরেই নদিয়ার ছোট জাগুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মাও নেত্রী জয়িতাকে। তাঁকে জেরা করে প্রতীক ও হাসিবুলের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যাপারে প্রমাণ মেলে। গ্রেপ্তারির পর মুর্শিদাবাদের বহরমপুর জেলে ছিলেন ওই দুই যুবক। এসটিএফ আদালতের অনুমতি নিয়ে শনিবার তাঁদের বহরমপুর জেল থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। রবিবার দু’জনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, মালদহ-সহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সংগঠন শক্তপোক্ত করার চেষ্টা করছে মাওবাদীরা। একাধিক সম্মুখ সংগঠন তৈরি করে তারা বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। চলছে মগজধোলাইয়ের কাজ। গোয়েন্দা পুলিশের অভিযোগ, এরকমই একটি সম্মুখ সংগঠনের সদস্য হিসাবে কাজ করতেন প্রতীক ও হাসিবুল। কাজের অঙ্গ হিসাবেই তাঁরা প্রতিনিয়ত জয়িতা ও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এমনকী, জঙ্গলমহলেও দু’জনের যাতায়াত ছিল বলে খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এ ছাড়াও ওই দুই মাও নেতা যোগাযোগ রাখতেন মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল, এমন বহু ব্যক্তির সঙ্গে। তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সংগঠনের নাম করে চাঁদা আদায় করতেন। যদিও ওই টাকার প্রায় পুরোটাই মাওবাদী তহবিলে যেত বলে অভিযোগ গোয়েন্দাদের। সেই টাকা কী ধরনের কাজে ব্যবহার করা হত, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই প্রতীক, হাসিবুল ও জয়িতাকে একসঙ্গে জেরা করা হচ্ছে। তিনজনের মোবাইল পরীক্ষা করা হচ্ছে। কোন কোন মাওবাদী নেতা ও নেত্রীর সঙ্গে এই ধৃতদের যোগাযোগ ছিল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.