ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিহার ভোটে প্রথমবার লড়ে সাফল্য পেয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM)। তার উপর ভর করেই একুশের বঙ্গের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন সুপ্রিমো। সেইমতো মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলায় যেখানে সংখ্যালঘুদের ভোট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেখানে সংগঠন তৈরিতে জোর দিয়েছে তাঁর দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ভরসা সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে এবার থাবা বসাবে মিম, এমন সতর্কতাও শোনা যাচ্ছিল নানা স্তরে। তবে সোমবার দেখা গেল অন্য ছবি। ওয়েইসিতে তেমন আস্থা না রাখতে পেরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কয়েকজন মিম সদস্য যোগ দিলেন তৃণমূলে।
দিন কয়েক আগেই রাজ্যের AIMIM-এর মুখপাত্র অসীম ওয়াকার বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা খুলে দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তাঁদের প্রস্তাব সাড়া দিলে স্বাগত, না দিলে একাই লড়বে মিম, এমনই ঘোষণা ছিল তাঁর। তবে দলের মুখপাত্রের সঙ্গে একমত হলেন না অনেক সদস্যই। আনোয়ার হাসান পাশার মতো অনেকেরই মত, বিজেপিকে রুখে দিতে তৃণমূলই ভরসা। তাই সরাসরি সেই দলেই যোগদান করেছেন তাঁরা। তৃণমূল ভবনে ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটকের হাত ধরে হয়ে গেল আনুষ্ঠানিক যোগদান। জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুরের বেশ কয়েকজন উচ্চশিক্ষিত মিম সদস্য রয়েছেন এই দলে।
সূত্রের খবর, এঁরা সকলেই আব্বাস সিদ্দিকির ঘনিষ্ঠ। দুই ২৪ পরগনার সংখ্যালঘু সমাজে ইনি বেশ জনপ্রিয়। তাই তাঁর সমর্থন নিয়ে একুশের লড়াই করা তৃণমূলের পক্ষে সুবিধাজনক, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তবে কি মিম সদস্যদের এই যোগদান আসলে কৌশলী চাল? এই প্রশ্নও উসকে উঠছে।
তবে এ রাজ্যে মিমের দায়িত্বে থাকা জামিরুল হাসানের দাবি, এদিন তৃণমূলে যাঁরা যোগ দিলেন, তাঁরা কেউ এখন মিম সদস্য নন। বহুদিন আগেই তাঁরা দল থেকে বিতাড়িত। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এঁরা মিমের নাম করে টাকা তোলার মতো অভিযোগে অভিযুক্ত। তাই তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাহলে কি মিম পৃথক লড়াইয়ের পথেই চলবে? এই প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি। তবে বিহারের পর যে লক্ষ্যে মিম বাংলায় ঝাঁপাচ্ছে, তাতে তৃণমূল মুসলিম ভোটব্যাংকে কতটা কী প্রভাব পড়ে, তা অবশ্যই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.