সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে পুজোর অনুমতি নিয়ে রাতারাতি ভোলবদল কলকাতা পুলিশের। উলটে সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হল। নিজেদের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এবার পুজোর অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে না। আগের বছরগুলিতে যে পদ্ধতিতে পুজোর অনুমতি দেওয়া হত, এ বছরও সেই নিয়মই বহাল থাকবে।
ছোট-বড় মিলিয়ে কলকাতায় দুর্গাপুজোর সংখ্যা কম নয়। পুজোর চারদিন ঠাকুর দেখতে রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। যাত্রীদের চাপ সামলাতে রাতভর শহরের রাস্তায় চলে যানবাহন। এমনকি, পুজোর চার দিন ট্রেনের সংখ্যাও বাড়িয়ে দেয় মেট্রো কর্তৃপক্ষও। শহর সচল থাকে ২৪ ঘন্টা। কিন্তু, বহু জায়গায় রাস্তা আটকে পুজোর প্যান্ডেলের জন্য যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, হয়রান হতে হয় সাধারণ মানুষকে। অনেক জায়গায় পরিস্থিতি এমনই হয় যে, জরুরি পরিস্থিতিতে দমকল কিংবা অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকতে পারে না। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর পুজোর সময়ে রাস্তা আটকে প্যান্ডেল করার কারণে হয়রানির একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল নবান্নে।
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে রাজ্যের প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, রাজ্যের কোথাও রাস্তা আটকে পুজোর প্যান্ডেল করা যাবে না। যদি দেখা যায়, প্যান্ডেলের কারণে রাস্তায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে কিংবা সাধারণ মানুষকে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে, সে ক্ষেত্রেও পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না। সরকারের এই কড়া অবস্থানে বিপাকে পড়েন শহরের নামী-দামী পুজো উদ্যোক্তারা। আশঙ্কা ছিল, রাস্তা আটকে প্যান্ডেল করা না গেলে, অনেক পুজো বন্ধও হয়ে যেতে পারে। সরকারি নির্দেশিকা জারির বিষয়টি অস্বীকার করাই শুধু নয়, পুজো নিয়ে বিতর্ক এড়াতে সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলল কলকাতা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে যখন পুজোর জায়গা বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরা, তখন রাস্তায় যানজটের কারণ দেখিয়ে অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছিল পুলিশ-প্রশাসন। মামলা গড়িয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টেও। সেই মামলায় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানতে চেয়েছিলেন, কলকাতায় বহু পুজোই তো রাস্তা আটকে হয়। সেক্ষেত্রে যদি বাধা দেওয়া না হয়, তাহলে যৌনকর্মীদের পুজোয় কেন আপত্তি করা হচ্ছে? শহরে পুজোর অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম বা গাইডলাইন মেনে চলা হয় কি না, তাও জানতে চায় কলকাতা হাই কোর্ট। তবে সে যাই হোক, এবছর রাজ্যে পুজোর অনুমতি নিয়ে কলকাতা পুলিশের বিবৃতিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন উদ্যোক্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.