শুভঙ্কর বসু: কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে হবে কলকাতা পুরভোট নাকি নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য পুলিশের কাঁধে? পুরভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগেও হল না কেন্দ্রীয় বাহিনী মামলার নিষ্পত্তি। শুক্রবার সন্ধে অথবা শনিবার সকালের মধ্যে অন্তর্বর্তী নির্দেশনামা হাই কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে বলেই জানালেন প্রধান বিচারপতি। তবে মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ ডিসেম্বর।
বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, রাজ্য পুলিশের নজরদারিতেই হবে কলকাতা পুরভোট। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে বিজেপি। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতির উপর আস্থা রেখেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরজি খারিজ করা হয়েছে। পুলিশই নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাতে পারবে বলেই মনে করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে তার তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপির আইনজীবী। তিনি জানান, রাজ্য পুলিশ দিয়ে কিছুতেই অবাধ এবং শান্তিপূর্ণভাবে পুরভোট হতে পারে না। সে প্রসঙ্গে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বিজেপির আইনজীবী। পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে জোর সওয়াল করেন তিনি।
এদিনের শুনানিতে রাজ্য, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। প্রধান বিচারপতি জানান, আপনারা যে সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার দেখভাল কে করবে? কাউকে নিয়োগ করেছেন? রাজ্য নির্বাচন কমিশন উত্তরে জানায়, রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কাউকে এখনও নিয়োগ করা হয়নি। প্রধান বিচারপতি জানান, কেমন পরিকল্পনা করেছেন তার ব্লু প্রিন্ট দিন। সেই অনুযায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তার নকশা জমা দেন।
প্রধান বিচারপতি একটি নির্বাচনী কেন্দ্রের উদাহরণ তুলে ধরে জানান, ধরুন ১২টি বুথে ১২০০ জন ভোটার রয়েছেন। সেই ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য মাত্র ৩৫ জন পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। আপনারা এটাকে পর্যাপ্ত বলে মনে করেন? যদি বুথের আশপাশে কোনও অশান্তি হয় তা সামাল দিতে পারবেন? সেই সময় কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, ভোটারদের ভীতি দূর করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন। কেন্দ্র প্রস্তুত। প্রয়োজন হলেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা সংক্রান্ত যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা আদৌ পালন হল কিনা খতিয়ে দেখার জন্য আগামী ২৩ ডিসেম্বর আবারও এই মামলার শুনানি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.