দীপঙ্কর মণ্ডল: ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের উত্তপ্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Calcutta) চত্বর। সোমবার এসএফআইয়ের (SFI) বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মিছিলে শামিল বাম ছাত্র সংগঠন AIDSO. তার পালটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, শতাব্দী প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের প্রতি অবমাননা করেছে বাম পরিচালিত ছাত্র সংগঠনগুলি। যদিও তাঁদের এই আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত সাফল্য নেই। মঙ্গলবার ফ্যাকাল্টি বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, কোনও বিভাগেই আসন বাড়ানো হচ্ছে না। পাশাপাশি, সোমবার ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে।
করোনার কারণে স্নাতকোত্তরে (Master Degree) অনলাইন পরীক্ষা হয়েছে এবার। সাফল্যের হার তুলনায় বেশি। কিন্তু স্নাতকোত্তরে আসন সংখ্যা কম হওয়ায় ভরতির ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে উত্তীর্ণদের। তাই আসন বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়ে পড়ুয়ারা সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েত করেন। এঁরা সকলেই SFI’এর সমর্থক। উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে যোগ দিতে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এলে তাঁর গাড়ি ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। এ নিয়ে ধুন্ধুমার বাধে ক্যাম্পাসে। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বিক্ষোভ প্রতিহত করতে উপাচার্যের সম্মতিতে পুলিশ ঢুকে লাঠিচার্জ করে। ক্যাম্পাস থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের।
মঙ্গলবার SFI’এর এই দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, বাণিজ্য, সাংবাদিকতা, লাইব্রেরি সায়েন্স, আইন এবং হোম সায়েন্স বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সেখানেই ঠিক হয়, কোনও বিভাগেই স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বাড়ানো হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে তা সম্ভব নয়। পাশাপাশি বিবৃতি জারি করে সোমবারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। বহিরাগতদের তাণ্ডবের সাক্ষী হতে হয়েছে। এটা লজ্জাজনক। পড়ুয়াদের কাছে আবেদন, তাঁরা যেন ক্যাম্পাসে যথাযথ আচরণ করেন।
এদিকে, এদিন দুপুরেই ফের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে মিছিল শুরু করে আরেক বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ডিএসও। সদস্যদের হাতে ছিল পোস্টার, ব্যানার। তাতে একাধিক বার্তা। তাদের এসব কর্মসূচির বিরোধিতায় TMCP পালটা অবস্থান বিক্ষোভে বসে। এই নিয়েও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.