ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয় শুক্রবার রাতে। জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ওই হামলার প্রতিবাদে নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার রাত থেকে সাগর দত্তে শুরু হয় কর্মবিরতি। এই নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা হয় স্বাস্থ্যকর্তা ও পুলিশকর্তাদের সঙ্গে। যদিও রফাসূত্র মেলেনি। এই অবস্থায় শনিবার পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা জানালেন, সোমবার সুপ্রিম রায় তাঁদের মনঃপুত না হলে ওই দিন বিকেল পাঁচটা থেকে সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করবেন তাঁরা। কার্যত রাজ্য সরকারকে ডেডলাইন দিয়ে দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
এদিন পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা হুঁশিয়ারি দেন, হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সোমবার রাজ্য সরকার কী জানায় এবং শীর্ষ আদালত কী বলে তা দেখার পরই তাঁরা বিকেল থেকে কর্মবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। যদিও সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা, পুলিশকর্তা প্রমুখ। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়ে তাঁরা প্রতিশ্রুতিও দেন। উলটো দিকে জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের প্রতিনিধিদের দাবি, লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। এইসঙ্গে হাসপাতালে ইলেক্ট্রনিক্স ডিসপ্লে বোর্ডে শূন্য শয্যার সংখ্যা, রোগীর শারীরিক অবস্থা জানানোর ব্যবস্থার করতে হবে। এর ফলে চিকিৎসক এবং রোগী পরিবারের ভুল বোঝাবুঝি কমবে বলে দাবি তাঁদের। সমস্ত বিষয়ে রাজ্য সরকারি কর্তাদের সঙ্গে কথা হলেও সোমবার সুপ্রিম শুনানির প্রসঙ্গ টেনে নতুন করে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিলেন ডাক্তাররা।
উল্লেখ্য, চিকিৎসকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রায় সমস্ত দাবিকে মান্যতা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার। রাজ্যের সামগ্রিক নিরাপত্তায় ১২ হাজার পুলিশ নিয়োগ, প্রত্যেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামারা বসানো, প্যানিক বাটানের ব্যবস্থা-সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কার্যত ঢেলে সাজানো হচ্ছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো। তবে এত কিছু রাতারাতি সম্ভব নয় কখনই। তার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। এর মধ্যেই নতুন করে উৎসবের আবহে পূর্ণ কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অর্থাৎ, আউটডোর, ইন্ডোর, এমনকী এমারজেন্সিতেও রোগীদের পরিষেবা দেবেন না তাঁরা। প্রশ্ন উঠছে, এই অবস্থায় গরিব রোগীরা কি ফের অসহায় অবস্থায় পড়বেন না? চিকিৎসা পেতে কোথায় যাবেন না তাঁরা?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.