ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দিনেদুপুরের দেশের জনপ্রিয় পর্যটনস্থলে বুলেটবৃষ্টিতে নিরীহ ২৬ জনের প্রাণ কেড়েছে জঙ্গিরা। পহেলগাঁওয়ের সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও অধরা মাস্টারমাইন্ডরা। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা এখনও কাশ্মীরের দুর্গম জঙ্গল এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। ধরা পড়তে পড়তে যেন হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে। কেন এখনও অধরা জঙ্গিরা? এই প্রশ্নে মোদি সরকারকে বারবার বিদ্ধ করেছেন বিরোধীরা। এবার পহেলগাঁও হামলার ১৪ দিনে ‘মৌনমোদি’র কাছে ১৪ দফা প্রশ্ন তুলে ধরল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। সোশাল মিডিয়া পোস্ট করে জঙ্গি হামলায়, স্বজনহারা পরিবার, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে একে একে ১৪ টি প্রশ্ন তোলা হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের তরফে। সেইসঙ্গে কটাক্ষ করে দাবি, ‘উত্তর দিন মৌনমোদী।’
পহেলগাঁও হামলার পর শোকের আবহেও দেশজুড়ে ক্ষোভের আঁচ দেখা গিয়েছে। প্রত্যাঘাত চাইছেন সকলে। নিরীহ ২৬টি প্রাণের নেপথ্যে পাকিস্তানের ‘কলকাঠি’ ইতিমধ্যে বেশ স্পষ্ট। তাই পাকিস্তানকে পালটা আঘাত করলে তবেই যথাযথ প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে মনে করছেন আমজনতা থেকে একাধিক রাজনৈতিক নেতানেত্রী। কেন্দ্রও অবশ্য এনিয়ে সক্রিয়তা দেখিয়েছে। দফায় দফায় সেনাবাহিনীর প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক সারছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তৎপরতা সেনাবাহিনীতেও। জোর দেওয়া হয়েছে মহড়ায়। যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ। তবে এখনও পর্যন্ত ইসলামাদের উদ্দেশে একটি পালটা আঘাতও করেনি নয়াদিল্লি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী মোদি আলাদা করে হামলা নিয়ে কোনও বিবৃতি দেননি। শুধু বিহারে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিলেন, অপরাধীদের কল্পনাতীত শাস্তি দেবেন।
এসব নিয়ে এবার তৃণমূলের তরফে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হল সোশাল মিডিয়ায়। পহেলগাঁওয়ে নৃশংস হামলার ১৪ দিন, অবিচারের ৩৩০ ঘণ্টা পার, তবু কেন সব জঙ্গি এখনও ধরা পড়ল না? তদন্তের অগ্রগতি কী? কেন আগাম ইঙ্গিত সত্ত্বেও এত বড় হামলা এড়ানো গেল না? কেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করে প্রধানমন্ত্রী বিহারের নির্বাচনী প্রচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন? এই মুহূর্তে দেশের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্র? এমন হাজারো প্রশ্নের মাঝে রয়েছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি জিজ্ঞাসাও। সীমান্ত সুরক্ষার কাজ করতে গিয়ে পাক রেঞ্জার্সের হাতে ‘বন্দি’ বাংলার জওয়ান পি কে সাউকে কবে দেশে ফেরানো হবে? আসলে পি কে সাউকে নিয়েও কেন্দ্র বা বিদেশমন্ত্রক অথবা সেনাবাহিনী – কারও তরফেও এখনও কোনও বক্তব্য মেলেনি। তাই তাঁকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। এই অবস্থায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছেই প্রশ্ন তুলল রাজ্যের শাসকদল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.