ছবি: প্রতীকী।
গৌতম ব্রহ্ম: ‘ডিএ’ না পেয়ে কী অন্তর্ঘাত করেছেন ভোটের কাজে নিযুক্ত সরকারি কর্মীদের একাংশ?
বহু বুথে যে হারে তৃণমূলের পক্ষে যাওয়া ব্যালট বাতিল হয়েছে, তাতে তেমনই দাবি করেছে জোড়াফুল শিবির। আসলে প্রতিটি ব্যালটে প্রিসাইডিং অফিসারের স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষর জরুরি। না হলে সেই ব্যালট বাতিল করার নিয়ম। এই নিয়মের ছিদ্রপথেই হয়েছে অন্তর্ঘাত! এমনটাই দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের।
অভিযোগ, প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা বাম প্রভাবিত কিছু সরকারি আধিকারিক ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অনেকে ব্যালটেই সই করেননি। সই করলে স্ট্যাম্প দেননি। যাতে করে ব্যালট বাতিল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মীদের সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন’। ফেডারেশনের রাজ্য আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক জানিয়েছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার দিন থেকেই সংগ্রামী যৌথ মঞ ভোট প্রক্রিয়াকে বানচাল করার জন্য লাগাতার উসকানি দিয়েছে। কখনও বলেছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী না এলে আমরা ডিউটিতে যাব না। কখনও আবার ‘ভাতা’ চেয়ে বায়না ধরেছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বুথের ভিতরের ছবি তোলারও অভিযোগ উঠেছে সরকারি কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এঁদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এঁরা দীর্ঘদিন ধরেই ‘নোংরামি’ করছে।’’
যদিও প্রতাপবাবুর দাবি, এই ধরনের কর্মীর সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগ সরকারি কর্মীই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সমর্থন করে স্বতঃস্ফুর্তভাবে নির্বাচনের কাজে শামিল হয়েছেন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ যথারীতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমান্তরাল ব্যালট ছাপিয়ে কারচুপির চেষ্টা হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে। সেগুলি ধরে ফেলতেই ‘অন্তর্ঘাত’-এর মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, বকেয়া ডিএ আদায়ের দাবি সামনে রেখে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করছে ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার অভিযোগ তুলে শহরের পথে মিছিলও করেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করার হুমকিও দিয়ে রেখেছে। তারপর এদিন গণনার সময় মিলল অন্তর্ঘাতের ইঙ্গিত। ফলে দুইয়ে দুইয়ে চার করছে তৃণমূল শিবির।
সম্প্রতি নবান্নে একাধিক দফতরে আচমকা ঢুঁ মেরে সরকারি কর্মীদের কাজকর্ম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালু করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ ছিল, বাম আমলের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে কাজ হচ্ছে এখন। মানুষকে ঘরে ঘরে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা অধিকাংশই খুব ভাল কাজ করছেন। তবে একাংশ বিরোধী দলের হয়ে নানা ধরনের কুৎসা এবং অপপ্রচার করছেন।’’ বলা বাহুল্য, মুখ্যমন্ত্রীর বলা সেই ‘একাংশ’-র দিকেই অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.