কৃষ্ণকুমার দাস: মাতৃবিয়োগের কারণে গতবছর এই দিনে সবাইকে বাড়িতে জন্মদিনের আয়োজন করতে বারণ করেছিলেন তিনি নিজেই। তবু শিল্পপতি থেকে টলিউড তারকা, শহরের কাউন্সিলরদেরও ফুল-মিষ্টি-শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে গিয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বেহালায় দলীয় অফিসে কর্মী-সমর্থকদের আয়োজনে ধুমধাম করে কেকও কেটেছিলেন। সেখানে হাজির ছিলেন বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও (Arpita Mukherjee)।
এবারের ছবিটা একেবারে উলটো। দু’জনেই এখন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির (ED) হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে। বস্তুত, সেই কারণে এবার পুজো শুরু থেকে বৃহস্পতিবার জন্মদিনেও মুখভার করে প্রেসিডেন্সি জেলের (Presidency Jail) সেলে নিঃসঙ্গ হয়ে কাটালেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সূত্রের খবর, আলিপুর মহিলা জেলে বন্দি অর্পিতা সরাসরি পার্থকে শুভেচ্ছাবার্তা জানাতে চেয়ে কারাগারের নিয়ম-পদ্ধতি জানাতে চান। কিন্তু অন্য জেল থেকে এক বন্দিনীর অন্য বন্দিকে সরাসরি জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর কোনও আইনি পদ্ধতি না থাকায় অর্পিতার আবেদন কারাগার কর্তৃপক্ষ খারিজ করে দেয়।
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের স্কুল সার্টিফিকেট অনুযায়ী, এদিন ছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জন্মদিন। অন্য বছরগুলিতে নাকতলার বাড়িতে এদিন সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করতেন তৃণমূল (TMC) কর্মী-সমর্থক-অনুগামী-শুভানুধ্যায়ীরা। মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতা এবং বিশিষ্টদের পাঠানো ফুল ও মিষ্টির প্যাকেট দফায় দফায় বিজয়কেতন নামের বাড়ির বসার ঘর থেকে সরিয়ে নিতেন অনুগামীরা। কিন্তু এদিন প্রেসিডেন্সি কারাগারে নিজের সেলে মুখভার করে বসে ছিলেন তিনি।
যদিও জেলরক্ষীদের স্বয়ং পার্থ বলেন, খাতায়-কলমে এদিন জন্মদিন থাকলেও মা শিবানী চট্টোপাধ্যায় জীবিত থাকাকালীন তাঁর ‘বার্থডে’ অন্যদিন পালন করতেন। এর আগে কখনও শারদোৎসবের তিথিতে তাঁর জন্মদিন পড়লে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজো কমিটি তা ধুমধাম করে পালন করত। নতুন দামি রঙিন পাঞ্জাবি পরে পুজো মন্ডপে হাজির হতেন জন্মদিনের পালনে। কখনও তাঁর জন্য আনা হত ফিটন গাড়ি। কাটা হত কেকও, পাশে থাকতেন নামী ব্যবসায়ী ও শিল্পকর্তারাও। এদিন অবশ্য জেলের সেলেই মনখারাপ করে বসে ছিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.