অর্ণব আইচ: মৃত্যুর পরও অটুট রইল বন্ধন। গঙ্গার প্রচণ্ড স্রোত বা জোয়ার-ভাটার টান, কিছুই সরাতে পারল না দু’জনকে। গঙ্গায় ঝাঁপিয়ে পড়ার ৬ দিন পর সোমবার বিকেলে উদ্ধার হল অভিষেক প্রতাপ সাউ ও সুজাতা প্রসাদ ওরফে প্রিয়াঙ্কার আলিঙ্গনবদ্ধ দেহ।
[প্রয়াত দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এ কী করলেন বিজেপি নেতা?]
এদিন বিকেলে জলপুলিশ ও উত্তর বন্দর থানার আধিকারিকরা যৌথভাবে টহল দিতে গিয়ে সুরমানি ঘাটে সন্ধান পান দুই মৃতদেহের। জেটিতে আটকে থাকা আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় এক নারী ও এক পুরুষের দেহ দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের। কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দেহ দু’টি অভিষেক ও প্রিয়াঙ্কার। ক্যানসার আক্রান্ত প্রিয়াঙ্কা, মৃত্যুর আগে আঁকড়ে ধরেছিলেন তাঁর প্রেমিক অভিষেককে। অভিষেকও মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত ছাড়েননি সঙ্গিনী নাট্যকর্মী প্রিয়াঙ্কাকে। অনেক আলোচনা করেই দু’জনে মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পুলিশের মতে, এভাবে আলিঙ্গনাবদ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনা বিরল। এর আগেও গঙ্গায় যুগল ঝাঁপ দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়েছে আলাদাভাবে। সেখানে কীভাবে দু’জনের দেহ আলিঙ্গনবদ্ধ অবস্থায় রইল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
[‘ধৈর্য রাখুন, ভাল কিছু অপেক্ষা করছে’, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা কেসিআরের]
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর লঞ্চ থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন মল্লিকবাজারের বাসিন্দা অভিষেক ও ইলিয়ট রোডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা। ঝাঁপ দেওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত একে অন্যের হাত ছাড়েননি। লঞ্চের যাত্রীরা ওই অবস্থাতেই দু’জনকে দেখেছিলেন। গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার পর জল পুলিশ ও ডুবুরিরা যুগলের সন্ধান শুরু করেন। কিন্তু তাঁদের সন্ধান মেলেনি। পুলিশের ধারণা, গঙ্গার স্রোতে দু’জনই ভেসে যাচ্ছিলেন। দু’জন আলাদা হওয়ার আগেই একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন। ওই অবস্থায় জলে ডুবে তাঁদের মৃত্যু হয়। আলিঙ্গনরত অবস্থায় এমনভাবে তাঁরা ছিলেন যে, স্রোতও তাঁদের আলাদা করতে পারেনি। ওই অবস্থায় তাঁরা প্রথমে জলে ডুবে যান। তার পর যখন দেহ দু’টি ভেসে ওঠে, তখনও তাঁরা একই অবস্থায় ছিলেন। আলিঙ্গনে থাকা অবস্থায় ভাসতে ভাসতে দেহ দু’টি আটকে যায় জেটিতে। দু’টি দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.