সুব্রত বিশ্বাস: নির্ধারিত আইন মেনে চলা রেলের ক্যান্টিনগুলি বেসরকারি সংস্থার হাতে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে শিয়ালদহ ডিআরএম দপ্তরের ক্যান্টিনটি বেসরকারির সংস্থার হাতে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন। ‘না লাভ না ক্ষতি’র ভিত্তির ক্যান্টিনে এখন খেতে গিয়ে বাড়তি কড়ি গুণতে হচ্ছে কর্মীদের।
কর্মীদের অভিযোগ, কয়েক মাস আগেও রেলকর্মী পরিচালিত এই ক্যান্টিনে খাবার মিলত কম দামে। যেমন-নিরামিষ ভাত ২৮ টাকা। যার দাম এখন দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। ডিম-ভাত ছিল ৩২ টাকা, এখন ৫০ টাকা। মাছ-ভাত আগে ছিল ৪০ টাকা, এখন দাম ৭০ টাকা। মুরগির মাংস-ভাত আগে ৪০ থাকলেও এখন ৭০ টাকা। প্রায় ৭৫ শতাংশ দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ কর্মীরা। শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিংয়ে ১৮০০ কর্মী কাজ করেন। পাশাপাশি বহু শ্রমিক এখানে খেতেন। তাদের এখন বাড়তি পয়সা দিয়েই খেতে হচ্ছে। বহু শ্রমিক দাম বাড়ায় ক্যান্টিনের খাবার এড়িয়ে চলছে।
ক্যান্টিনটি এভাবে বেহাত হওয়ার পিছনে রেল সুকৌশলী নীতি নিয়েছিল বলে পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন। তিনি জানান, রেল বোর্ডের সার্কুলার ৩৮ অনুযায়ী স্ট্যাটুচারি ক্যান্টিন চলে রেলের যেখানে ১০০ বেশি কর্মী রয়েছে। একই আইনে শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিংয়ে ‘না লাভ, না ক্ষতির’ ক্যান্টিন চলছিল বহু বছর ধরে। ৬ জন রেলকর্মী কাজ করতেন এই ক্যান্টিনে। যাদের পদই ছিল ‘কুক’-এর। পুজোর আগে ক্যান্টিনটি সংস্কার হবে বলে বন্ধ করে রেল। এর পর সামান্য সংস্কার করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিয়ালদহের মহিলা কল্যাণ সমিতিকে। সমিতিই ক্যান্টিনটি লিজে দেয় বেসরকারি সংস্থার হাতে। ছ’জন রেলকর্মীকে অন্যত্র সরানো হয়। নতুনভাবে পরিচালনা শুরুর সময় ওয়েলফেয়ার থেকে কুপন সংগ্রহ করে ক্যান্টিনে খেতে যাওয়ার রীতি চালু করলেও সমস্যা দেখা দেয়।
অভিযোগ, এক জায়গা থেকে কুপন সংগ্রহ করে ক্যান্টিনে খেতে যাওয়াটা বিশেষ ঝামেলা ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পাশাপাশি সেই কুপনে দেওয়া হতো নিম্নমানের খাবার। যা খেতে পারতেন না কর্মীরা। ফলে বাড়তি দাম দিয়েই খেতে হতো। এখন তা সম্পূর্ণভাবেই বাড়তি দামের ক্যান্টিনে পরিণত হয়েছে। এনিয়ে ক্যান্টিন কমিটি তীব্র বাধাও দিয়েছিল। কিন্তু রেল প্রশাসন কর্ণপাত করেনি বলে তাদের অভিযোগ। ক্যান্টিন বেসরকারির হাতে দেওয়ার পাইলট প্রোজেক্ট শিয়ালদহ থেকে শুরুর অভিযোগ উঠেছে। যদিও চিফ ওয়েলফেয়ার ইন্সপেক্টর মলয় ভট্টাচার্য বলেছেন, মহিলা কল্যাণ সমিতি রেলেরই একটি সংগঠন। তারাই ক্যান্টিনের পরিচালনা করছে। খাবার বিক্রি হয় দু’ভাবেই। সাবসিডি ও নন সাবসিডির ভিত্তিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.