অভিরূপ দাস: রেলের কামরা হোক বা বড় ব্রিজ, ইঁদুরের দংশনে বিপন্ন। নর্দমার মাটি তুলে ইঁদুর বাহিনী নালা আটকে দিচ্ছে। মূষিক বাহিনীর এহেন আক্রমণে নানা ক্ষেত্রে নগরজীবন জেরবার। এমনকী খোদ মহানাগরিকের আসনও ফোঁপরা হওয়ার জোগাড়। হ্যাঁ, এমনটাই হয়েছে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে। সোফাসেটের অন্দরে রীতিমতো ইঁদুরের সংসার, এমনকী বাচ্চাকাচ্চাও হয়েছে। সোফার গদি, স্পঞ্জ ইত্যাদি কেটেকুটে ফর্দাফাঁই। মেয়র এজন্য আঙুল তুলছেন রাস্তার ওপারের এক খাবারের দোকানের দিকে।
তাঁর অভিযোগ, রাস্তায় এঁটোকেঁটো পড়ে থাকার জন্যই ইঁদুরের উৎপাত হয়েছে। অভিযোগ, তাঁর বাড়ির সামনে মিষ্টির দোকানে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলছে রাস্তায়। খাবারের লোভে ইঁদুর এসে ঢুকেছে মেয়রের বাড়িতে। ফিরহাদের কথায়, ‘‘আমার বাড়ির সামনে মিষ্টির দোকান। দোকানি পুরনো মিষ্টির রসগুলো নালায় ফেলে। তার লোভে এসে জুটছে গুচ্ছের ইঁদুর। পিছনে আমার বাড়ি। ইঁদুরগুলো নালায় ঢুকে রস খেয়ে আমার বাড়ির নর্দমা দিয়ে উঠছে।’’
ইঁদুর সমস্যায় জেরবার হয়ে মেয়রের দ্বারস্থ হন দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা অশোক সেনগুপ্ত। কলকাতা পুরসভার ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অশোকবাবুর অভিযোগ, ‘‘ইঁদুরের উৎপাতে প্রাণ অতিষ্ঠ। বাড়ির সামনে ইঁদুরের উৎপাত চরম। নর্দমা থেকে তারা এমনভাবে মাটি তুলেছে বন্ধ হয়ে গিয়েছে নিকাশি নালা। জল যাচ্ছে না।’’ ঢাকুরিয়ার ওই এলাকায় অগুনতি খাবার দোকান। সেই দোকানিদের উদাসীনতার জন্যেই ইঁদুরের রমরমা। মেয়র জানিয়েছেন, যে এলাকায় খাবারের দোকান বেশি সেখানে ইঁদুরের উৎপাত বেশি হচ্ছে।
এদিন মেয়র জানিয়েছেন, অবিলম্বে সমস্ত খাবারের দোকানকে নোটিস দেওয়া হবে। রাস্তায় খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলা বরদাস্ত করা হবে না। ফিরহাদের আশঙ্কা, এমনটা চলতে থাকলে, কলকাতার কিছু জায়গা একদিন ধসে পড়ে যাবে। মেয়র জানিয়েছেন, ইঁদুরের বাড়বাড়ন্তর জন্য শুধু দোকানিরা নন, দায়ী কলকাতার বাসিন্দাদের একাংশও। ময়লা রাখার জন্য বাড়ি বাড়ি বালতি দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। অভিযোগ, সেগুলোয় চাল-ডাল রেখে খাবারের অবশিষ্টাংশ রাতের অন্ধকারে রাস্তার মধ্যে ফেলছেন অনেকে। তার টানেও জমা হচ্ছে ইঁদুর। উল্লেখ্য, ঢাকুরিয়া ব্রিজের দশাও বেহাল করেছিল ইঁদুর। মেয়র জানিয়েছেন, কাঁচের গুড়ো সিমেন্টের সঙ্গে মিশিয়ে সেখানে ইঁদুরের উৎপাত ঠেকানো গিয়েছে। মেয়র জানিয়েছেন, এমনটা চলতে থাকলে সমস্ত খাবারের দোকানের সামনের নালা কাঁচের গুড়ো-সিমেন্ট মিশিয়ে ঢালাই করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.