অর্ণব আইচ: রাত তিনটের সময় বেরোবে ওরা। দলে থাকবে ৬ জন। সাধারণতন্ত্র দিবসের ভোররাতে রেড রোডের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরীক্ষা চালাবে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনী। পুলিশ জানিয়েছে, বহু বছর হয়ে গেল রেড রোডের প্যারেডে নামানো হয় না কলকাতা পুলিশের কুকুর বাহিনীকে। টানা প্যারেডের মহড়া ও সাধারণতন্ত্র দিবসে প্যারেডের ধরন না-ও সহ্য করতে পারে গোয়েন্দা কুকুর। কিন্তু তা বলে যে ডিউটিকে অগ্রাহ্য করা যায় না। আর সাধারণতন্ত্র দিবসের মতো অনুষ্ঠানে রেড রোড এমনিতেই নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকে। এছাড়াও সারা শহরজুড়ে থাকে আঁটসাঁট নিরাপত্তা। তাই এই বিশেষ দিনটিতে তাদের ঘুমোলে চলবে না।
রবিবার ভোর তিনটের কিছুটা আগেই পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের কেনেল থেকে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর ৬ সদস্যকে বের করে নিয়ে আসা হবে রেড রোডে। রাত তিনটে থেকে ৬ জন মিলে শুরু করবে ডিউটি। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এই ৬টি পুলিশ কুকুরের মধ্যে কোনওটি ল্যাবরেডর। আবার কোনওটি জার্মান শেফার্ড। তারা প্রত্যেকেই ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ’। তাদের ছড়িয়ে দেওয়া হবে রেড রোডের বিভিন্ন জায়গায়। রাত তিনটের সময়, যখন সারা শহর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন তারা শুরু করবে কাজ। রেড রোডের পাশে মাঠে যেখানে দর্শকরা দাঁড়িয়ে প্যারেড দেখবেন, সেখান থেকে শুরু করে যে মঞ্চে ভিভিআইপিরা থাকবেন, প্রত্যেকটি আনাচকানাচ শুঁকে দেখবে সারমেয় বাহিনীর এই সদস্যরা।
তাদের বিশেষ নজর থাকবে মাঠ ও রাস্তার পাশে ছোট-বড় গর্তের উপর। কারণ, কেউ কোনও নাশকতা করতে চাইলে সেই গর্তের মধ্যে রেখে দিতে পারে বিস্ফোরক। তারা পরীক্ষা করা যাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীরাও পুরো রেড রোড পরীক্ষা করবেন। এই পরীক্ষা চলবে চার ঘণ্টা। সকাল সাতটার পর এই ৬ সদস্য চলেে যাবে নিজেদের কেনেলে। এবার নিয়ে আসা হবে সারমেয় বাহিনীর চার সদস্যকে। রেড রোডের চারটি প্রান্তে বসিয়ে রাখা হবে তাদের। আপদকালীন পরিস্থিতিতে দরকার হলে সেই বিশেষ জায়গায় ছুটে যাবে তারা। প্যারেড শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে এই চারজনের ডিউটি।
এদিকে, নিরাপত্তার খাতিরে শনিবার রাত দশটা থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রেড রোড। সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডের এই জায়গাটি মুড়ে ফেলা হবে নিরাপত্তার চাদরে। রাত থেকেই রেড রোডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী ও কমান্ডো। এছাড়াও দশটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে হবে নজরদারি। রেড রোডের আশপাশের অঞ্চলে থাকছে দশটি বাঙ্কারও। শহরের নিরাপত্তায় নামছে অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ। রেড রোডের নিরাপত্তার জন্য থাকছেন ২০ জন ডিসি পযমর্যাদার অফিসার ও অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও। কুইক রেসপন্স টিমের গাড়ি নিয়ে জায়গায় জায়গায় মোতায়েন থাকছে মহিলা কমব্যাট ফোর্স। পুলিশ কন্ট্রোলরুম ভ্যান, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, প্রত্যেকটি থানা এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক টহলদার বাইক, গাড়ি ও পিকেট তৈরি থাকছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.