অর্ণব আইচ: আর জি কর দুর্নীতি মামলায় এবার জালিয়াতির ধারা যুক্ত করল সিবিআই। এর আগে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও দুর্নীতি দমন আইনের ৭ নম্বর ধারায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছিল। এবার যুক্ত ৪৬৭ ধারা। যা আগের ধারাগুলোর তুলনায় কড়া। দোষী প্রমাণিত হলে সাজার মেয়াদ কমপক্ষে ১০ বছর।
তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকে কেন্দ্র করে আর জি করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার হাতে পেয়েছে সিবিআই। তড়িঘড়ি রহস্যভেদের চেষ্টায় মরিয়া তদন্তকারীরা। জুড়ল নতুন ধারা। কিন্তু ঠিক কী দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সন্দীপ ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে? অভিযোগ, স্বাস্থ্যভবন ও কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই ফুড স্টল, কাফে, ক্যান্টিন, সুলভ কমপ্লেক্স তৈরির জন্য টেন্ডার দেওয়া হত। তিনজন বিশেষ ব্যবসায়ীই এই প্রত্যেকটি ‘বেআইনি’ টেন্ডার পান। তাঁদের একেকজনকে কয়েক কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়। ফিনান্স ও অ্যাকাউন্ট অফিসারদের কিছু না জানিয়েই এই বরাতগুলি দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ও অন্যান্য কাজ করানো হয় পূর্ত দপ্তরকে না জানিয়েই। ডাক্তারি শিক্ষার তহবিল নয়ছয়ের অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগ, পুরসভার বদলে হাসপাতালের কর্তারা পার্কিং থেকে টাকা আদায় করে তা সরিয়ে দেন। চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়েছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে চাহিদামতো রদবদলেরও অভিযোগ উঠেছে। ভেন্ডার বা বিক্রেতাদের কাছ থেকেও কুড়ি শতাংশ টাকা তোলা হত বলেও অভিযোগ উঠেছে। করোনার সময়ে কোভিডের জন্য আসা রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে আরামদায়ক চেয়ার, সোফা, ডাইনিং টেবিল, ফ্রিজ ও আরও অনেক কিছু কেনা হয়। সরকারি টাকায় কেনা বহু জিনিসও এমন নার্সিংহোমে যেত, যার আসল মালিক স্বাস্থ্যকর্তা। এমনকী, ভেন্ডারদের সাহায্যে এক স্বাস্থ্যকর্তার বাগানবাড়ি সাজানো হত ও তা না করলে তাঁরা হুমকির মুখে পড়তেন এমনও অভিযোগ উঠে এসেছে। এখানেই শেষ নয়, একদিন অন্তর হাসপাতালের ব্যবহার হয়ে যাওয়া সিরিঞ্জ, স্যালাইনের বোতল, রবার গ্লাভস, হ্যান্ড গ্লাভস মিলিয়ে কয়েকশো বর্জ্য বের হতো। তাতেও নাকি দুর্নীতি করতেন সন্দীপ। একটা ব়্যাকেট বানিয়ে ফেলেছিলেন, তাতে যুক্ত ছিলেন দু’জন বাংলাদেশিও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.