শুভঙ্কর বসু: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ (DA) প্রদান সংক্রান্ত আগের রায় বহাল রাখল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বা SAT। রায় পুনর্বিবেচনার রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে বুধবার তা জানিয়ে দিল বিচারপতি আর কে বাগের বেঞ্চ। অতএব রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া-সহ নয়া হারে ডিএ দিতে হবে। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ (DA) দেওয়ার দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কংগ্রেস প্রভাবিত সংগঠন কনফেডারেশন অব এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। সেই মামলার রায়ে গত বছর ২৬ জুলাই স্যাটের এই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ (DA) দিতে হবে। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। যা এদিন খারিজ হয়ে গেল।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি, কেন্দ্রীয় হারে তাঁদের ডিএ (DA) বা মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে। দিল্লিতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরাও উচ্চহারে ডিএ (DA) পান। এই বৈষম্য মেটানোর দাবি জানিয়েছিলেন রাজ্যে কর্মরত কর্মচারীদের একাংশ। স্যাটের এদিনের রায়কে স্বাগত জানিয়ে মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের তরফের মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকার যেকোনও ভাবে বিষয়টিকে বিলম্বিত করতে চাইলেও ফের একবার প্রমাণিত হয়ে গেল কেন্দ্রীয় হারে ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। এবং তা রাজ্য সরকারকে দিতে হবে।”
২০১৭ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বা SAT (স্যাট)-এর দ্বারস্থ হয় ওই কর্মচারী সংগঠন। কিন্তু সেই মামলার রায় তাঁদের বিপক্ষে গিয়েছিল। এরপর তাঁরা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সময় রায়ে হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল, ডিএ সরকারের দয়ার দান। সেই রায়কে ফের চ্যালেঞ্চ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় কর্মচারী সংগঠন। দেবাশিস করগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানায়, ডিএ সরকারের দয়ার দান নয়। এটা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের নায্য প্রাপ্য। তবে কী হারে ডিএ দেওয়া হবে, কীভাবে রাজ্য তা মেটাবে, তা ঠিক করতে ফের মামলাটি স্যাটে পাঠায় হাই কোর্ট।
সেখানে ফের শুনানি শুরু হয়। সেই মামলার শুনানিতে ২০১৯ সালে ২৬ জুলাই স্যাট জানায়, বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্যকে। কীভাবে সেই বকেয়া মেটানো হবে তা ঠিক করবে রাজ্য। একইসঙ্গে স্যাট জানিয়েছিল, সর্বভারতীয় মূল্য সূচক বা রোপা আইনের ভিত্তিতে রেটের ভিত্তিতে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। এমনকী, ২০০৬ সালের ১ জুলাই থেকে ১ জুলাই, ২০১৬ সাল পর্যন্ত অনিয়মিত ডিএ দেওয়ার ফলে যে বকেয়া জমে রয়েছে, তাও মেটাতে হবে দ্রুত। কিন্তু সেই রায় পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়েছিল রাজ্য। ফলে ফের শুনানি শুরু হয়। ৩ মার্চ শুনানি শেষের পর এদিন তার রায় দান হয়।
এদিনও রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, মহামারী আবহে কেন্দ্রের ডিএ বকেয়া রাখার প্রসঙ্গ তোলেন। কিন্তু তা খারিজ করে দেন বিচারপতি। তিনি পাল্টা জানান, “মহামারী প্রসঙ্গ তুলতে চাইলে আপনারা উচ্চ আদালতে যেতে পারেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.