Advertisement
Advertisement

যৌন ব্যবসায় রোহিঙ্গা কিশোরীরা, নাম জড়াল কলকাতারও

বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস।

sex industry booms in Rohingya refugee camps
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 21, 2018 8:51 pm
  • Updated:August 6, 2019 2:43 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অল্পবয়সী মেয়েরা এখন বিদেশিদের যৌন লালসার টার্গেট হয়ে উঠছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কক্সবাজার থেকে যৌন ব্যবসার জন্য রোহিঙ্গা মেয়ে ও শিশুদের পাচার করা হচ্ছে। বিদেশি খদ্দের সেজে এমনই তথ্য পেয়েছে বিবিসি নিউজের একটি দল।

[কল্পবিজ্ঞানকেও হার মানাচ্ছে চিন! যুদ্ধক্ষেত্রে রিমোট পরিচালিত ট্যাঙ্ক নামাচ্ছে বেজিং]

ফাউন্ডেশন সেন্টিনেল নামের অলাভজনকে একটি প্রতিষ্ঠান ও বিবিসি নিউজের একটি দল সম্প্রতি কক্সবাজার গিয়েছিল এমনই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নেটওয়ার্কগুলি সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে। আনোয়ারার (নাম পরিবর্তিত) বয়স ১৪। দমনপীড়নে পরিবারের সবাই মারা যাওয়ার পর মায়ানমার থেকে পালাচ্ছিল সে। গন্তব্য বাংলাদেশ। পথে এর-ওর কাছে সহায়তা চাইছিল। কয়েকজন মহিলাকে ভ্যানে করে আসতে দেখে উঠে পড়ে গাড়িতে। তারাই আনোয়ারাকে সুন্দর জীবনের আশ্বাস দিয়ে সঙ্গী করে নেয়। পরে অন্য একটি গাড়িতে তুলে দেয়। কিন্তু সুন্দর জীবনের সেই ঠিকানা খুঁজে পায়নি আনোয়ারা। কাছের শহর কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আনোয়ারা বলছে, ‘এখানে আসার পরপরই দু’জন ছেলে আসে। ওদের অশোভন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখায় এবং মারধর করে। এরপর তারা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধর্ষণ করে।’ উন্নত ও নিরাপদ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে কাজের কথা বলে তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়। বিদেশি ক্রেতা সেজে দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসতে থাকে একের পর এক প্রস্তাব।

Advertisement

ফাউন্ডেশন সেন্টিনেল শিশুদের শোষণ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে আসছে। ১৪ বছরের মাসুদা (নাম পরিবর্তিত) বলে, ‘এক নারী তাকে কাজের প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি রোহিঙ্গা। অনেক দিন ধরে এখানে আছেন। সবাই জানে তিনি মেয়েদের যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আমরা তাকে চিনি। কিন্তু আমার কোনও উপায় ছিল না। আমার পরিবার নিখোঁজ, আমার টাকা নেই। মায়ানমারে আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি। আমি আমার ভাইবোনদের সঙ্গে মাঠে খেলে বেড়াতাম। কিন্তু এখন আমি খেলা ভুলে গিয়েছি।’ ক্যাম্পে অনেক মা-বাবা কাঁদছেন। হয়তো আর কোনও দিন সন্তানের ডাক শুনতে পাবেন না। আবার সুন্দর জীবনের আশায় অনেক অভিভাবকের মুখে হাসি। একজন মা বলেই বসলেন, ‘এই ক্যাম্পের জীবনের চেয়ে ‘বাইরে যে কোনও জায়গাই ভাল। বিবিসি ও ফাউন্ডেশন সেন্টিনেল ছোট ছোট হোটেল ও সৈকত-সংলগ্ন মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জোগাড় করে ফেলে স্থানীয় দালালদের টেলিফোন নম্বর। জানা যায়, রুমও ভাড়া পাওয়া যাবে। এই দুই কিশোরী দারিদ্র ও যৌনবৃত্তির বেড়াজালে পড়ে রয়েছে। তারা নিজের মুখেই বলছে, যৌন কর্মের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ ছাড়া নিজেদের ও পরিবারকে সাহায্য করার আর কোনও পথ তাদের নেই।

রোহিঙ্গা কিশোরীদের বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, নেপালের কাঠমান্ডু ও ভারতের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ঢাকায় সাইবার ক্রাইম ইউনিট দেখিয়েছে, কীভাবে ইন্টারনেটের সাহায্যে পাচারকারীরা মেয়েদের পাচার করে। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও গোপন ওয়েবসাইট এসব কাজ করে। এমন ওয়েবসাইটও পাওয়া যায়, যেখানে কীভাবে রোহিঙ্গা মেয়েদের ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে ধাপে ধাপে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এই রোহিঙ্গা সংকটটি বাংলাদেশে যৌন-বাণিজ্য গড়ে তুলেছে তা কিন্তু নয়। কিন্তু যৌনকর্মী হিসেবে নারী ও শিশু পাচারের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়- রোহিঙ্গা মেয়েদের দর সবচেয়ে কম। পতিতাবৃত্তির ক্ষেত্রেও তারা সেখানে সবচেয়ে নিচের সারিতে রয়েছে। বিবিসির দলটির হাতে খুব দ্রুতই বিভিন্ন দালালদের কাছ থেকে রোহিঙ্গা মেয়েদের ছবি আসতে শুরু করল। যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। বলা হল, ছবির মেয়েদের পছন্দ না হলে এমন আরও বহু আছে। চাইলেই পাওয়া যাবে। যখন খদ্দের থাকে না তখন এসব মেয়েরা দালালদের বাড়িতে রান্নাবান্না বা ধোয়ামোছার কাজ করে।

[ফুঁসছে ‘ড্রাগন’, রক্তাক্ত যুদ্ধের হুমকি জিনপিংয়ের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement