ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: অর্থের অভাবে কলেজের পড়া শেষ হয়নি। দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা ছেড়ে দেন শুভঙ্কর। সেই তিনিই নিলেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। কোভিডে প্রয়াত বাবার দেহ আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে (R G Kar Medical College) দান করল নদিয়ার (Nadia) প্রত্যন্ত সাতিখালী গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে।
১২ জুন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন নদিয়ার শুকদেব মণ্ডল। পেশায় চাষী শুকদেবের প্রথম দিন থেকেই ধুম জ্বর। কৃষ্ণনগরের হীরামনি মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন নামছিল দ্রুত। বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না দরিদ্র পরিবারের। ১৭ জুন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয় শুকদেবকে। ১৮ জুন সন্ধে সাতটা নাগাদ মারা যান তিনি।
এরপর? বাবার দেহ পুড়ে খাক হয়ে যাবে চাননি শুভঙ্কর। বরং তিনি জানতে চান করোনায় মৃত্যুর ফলে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কী ধরনের প্রভাব পড়ে। কেন অকালে মৃত্যু নেমে আসল বাবার। শুভঙ্করের কথায়, কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থতার পথেই মারা যাচ্ছেন। অতর্কিতে নেমে আসছে মৃত্যু। আমার বাবাও সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু আচমকা কি যে হয়ে গেল। তেমনটা আর কারও সঙ্গে হোক চান না শুভঙ্কর।
কোভিডে কোন অঙ্গে কতটা ক্ষতি? কীভাবে মৃত্যুকে রুখে দেওয়া যাবে। করোনায় মৃত শুকদেবের প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট চিকিৎসকদের তা জানতে সাহায্য করবে। এ রাজ্যে কোভিড-গবেষণার ক্ষেত্রে নজির তৈরি করেছিলেন রাজ্যে অঙ্গদান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ব্রজ রায়। তাঁর সূত্র ধরেই রাজ্যে হচ্ছে একের পর এক করোনায় মৃত ব্যক্তির প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি। বাবার দেহ দান করতে চেয়ে গণদর্পণ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন শুভঙ্কর। গণদর্পণের সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পেশায় কৃষিজীবী এক পরিবারের এহেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে আমরা আপ্লুত। ২১ জুন সোমবার আর জি কর মেডিক্যাল হাসপাতালে শুকদেব মণ্ডলের মরদেহ অটোপসি করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.