ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: কাশলেই মুখ ভরে যেত রক্তে। ঠোঁট থেকে রক্ত বয়ে যেত। কয়েকদিন পর আবার কমেও যেত। এমন করেই জীবন থেকে ৩৭ বছর চলে গিয়েছে। এখন কাশিও নেই। রক্তপাতও বন্ধ। কারণ, মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে ফুসফুসের ডান দিকের নিচ থেকে আট মিলিমিটার কেটে বাদ দিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল। যাতে সুস্থ রোগী।
জানা গিয়েছে, এমন অস্ত্রোপচার এসএসকেএমে প্রথম। রোগের নাম ‘সিকুয়েস্ট্রশন অফ লাংস’। দশ হাজার মানুষ পিছু একজনই এমন রোগে ভোগে। বয়স যত বাড়ে, রোগ তত মারমুখী হয়। বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা অস্ত্রোপচার। ৩ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে সিটিভিএস (কার্ডিওথোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার সার্জারি) শেখ আবুল কালাম আজাদের বুক খুলে ডান ফুসফুসের নিচ থেকে কালো হয়ে যাওয়া এই অংশটি কেটে বাদ দিয়েছে। এখন পুরো সুস্থ তিনি। আবুল কালাম মুর্শিদাবাদের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। আর এই অস্ত্রোপচার করেছেন ডা. অধ্যাপক শান্তনু দত্ত।
চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ঠিক বিরল বলা যায় না। আবার সবাই এমন জন্মগত রোগে ভোগে তা-ও নয়। তবে অত্যন্ত দ্রুত ও সাবধানে অপারেশন করতে হয়।’’ শান্তনুবাবুর সহযোগী ডা. ঋত্বিক সুদ প্রায় তিন মাস ধরে রোগীর চিকিৎসা করেছেন। আউটডোরে আবুল যখন আসতেন, কাশলেই মুখ ভর্তি টাটকা রক্ত। ঋত্বিকের কথায়, ‘‘বুকের সিটি স্ক্যান করতেই বোঝা গেল ফুসফুসের ডান দিকে নিচে রক্ত জমে। তাই দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, সিকুয়েস্ট্রশন অফ লাংস বেড়ে যায় ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে। যখনই সংক্রমণ বাড়ে, তখনই কাশির সঙ্গে রক্তপাত হয়। ওষুধ খেলে কমে। কিন্তু একটা সময়ে আর ওষুধে কাজ হয় না। তখন ফুসফুসের ওই অংশ কেটে বাদ দিতে হয়। এই ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.