রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সহকর্মী হিসেবে সম্পর্ক কখনওই বিশেষ ঘনিষ্ঠ ছিল না। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যেন বঙ্গ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ল দিলীপ ঘোষের। বিয়ে নিয়ে সহকর্মীরা নানা টিপ্পনি কাটছেন, কখনও কখনও পালটা দিচ্ছেন দিলীপ। এভাবেই আড়ালে-আবডালে গৃহযুদ্ধ চলছিল। সেই আগুনে ঘি পড়ে সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষের দিঘার জগন্নাথ মন্দির যাত্রা নিয়ে। কিন্তু মঙ্গলবার সল্টলেকে দলের সদর দপ্তরে শুরু হওয়া ২ দিনের বৈঠকে এনিয়ে দলকে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তাঁর বার্তা, দিলীপ ঘোষকে নিয়ে প্রকাশ্যে কোনওরকম মন্তব্য নয়, যা বলার দলের অন্দরে বলতে হবে। যদিও এদিনের বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন না দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) নিজে। এনিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ”আজ তো কোনও বৈঠক ছিলও। আগামিকাল বৈঠক আছে, দেখা যাবে।”
দিলীপ ঘোষকে নিয়ে মহা ফাঁপড়ে বঙ্গ বিজেপি। বিয়ে নিয়ে আগেই দল কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছিল। দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনই স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে পুজো দিতে যাওয়া বিতর্ক আরও বাড়িয়ে তোলে। একবিন্দু সময় নষ্ট না করে ওইদিনই সৌমিত্র খাঁ, অশোক দিন্দারা মন্তব্য করেছিলেন। দিলীপ ঘোষকে ‘বঙ্গ বিজেপির লজ্জা’ বলে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী কিংবা সুকান্ত মজুমদার অবশ্য সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত ছিলেন।
এবার দলের বৈঠকে সুকান্ত বললেন, “কোনওরকম বেফাঁস মন্তব্য করবেন না। দলের সবার কাছে অনুরোধ করছি, দিলীপ ঘোষ ইস্যুতে যা বলার, দলের ভিতরে বলুন। দলের বাইরে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না।” এই বৈঠকে আর দিলীপ ঘোষকে সরাসরি আক্রমণের পথে হাঁটেননি সৌমিত্র। বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বলেন, ”দিলীপ ঘোষ ব্যক্তিগতভাবে তাঁর রুচি অনুযায়ী নিজের বক্তব্য রাখছেন, আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
তবে এই বৈঠকে দিলীপ ঘোষের ডাক না পাওয়া নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে কলকাতায় নেই দিলীপ। স্ত্রীকে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে কুলিয়ানা গ্রামে রয়েছেন। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠদের মত, বৈঠকে ডাক না পেয়েই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন তিনি। আর সুকান্তর সাফাই, ”আজ তো বৈঠক ছিল না। আগামিকাল বৈঠক আছে, দেখা যাবে।” ফলে স্পষ্ট, দিলীপ ইস্যুতে সাবধানী বঙ্গ বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.