Advertisement
Advertisement
Kolkata

শিয়ালদহে ধর্ষণে অভিযুক্তকে ধরতে এসে আক্রান্ত তামিল পুলিশ, উদ্ধারে লালবাজার

১০০ ডায়ালেই প্রাণে বাঁচল তামিলনাড়ু পুলিশ।

Tamilnadu police allegedly beaten in Kolkata

ফাইল ছবি

Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 12, 2025 9:04 am
  • Updated:May 12, 2025 9:05 am  

অর্ণব আইচ: তামিলনাড়ুতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর পলাতক পরিযায়ী শ্রমিক কলকাতায়। অন্তঃসত্ত্বা ওই নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে শহরে হানা দিতেই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের হাতে আক্রান্ত হলেন তামিলনাড়ু পুলিশের আধিকারিকরা। শেষ পর্যন্ত ১০০ ডায়ালেই বাঁচল তাঁদের প্রাণ। কলকাতা পুলিশ উদ্ধার করল তামিলনাড়ু পুলিশের আধিকারিকদের। পূর্ব কলকাতার এন্টালি থানা ও তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হল আব্বাস বৈদ‌্য নামে ওই পরিযায়ী শ্রমিকও।

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার ১০০ ডায়ালে একটি ফোন পেয়ে তৎপর হয়ে ওঠে লালবাজার। এক ব‌্যক্তি নিজেকে তামিলনাড়ু পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন। তিনি জানান, তামিলনাড়ুতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ তথা পকসো মামলায় পলাতক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে এসে শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে তাঁদের ঘিরে ফেলা হয়েছে। তাঁদের উপর শুরু হয়েছে হামলা। তাঁরা অভিযুক্তকে ধরে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে অভিযুক্তকে কেড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই তথ‌্য পেয়েই লালবাজারের পক্ষ থেকে এন্টালি থানাকে বিষয়টি জানানো হয়।

Advertisement

এন্টালি থানার পুলিশ আধিকারিকরা কিছুক্ষণের মধ্যেই শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে এসে দেখেন, ভিনরাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের মারধর করতে উদ‌্যত এলাকার কিছু ব‌্যবসায়ী তথা বাসিন্দা। কলকাতা পুলিশের বাহিনীই ‘চক্রব্যূহ’র মধ্যে থেকে তামিলনাড়ু পুলিশের বাহিনীকে বের করে নিয়ে আসেন। তাঁদের উপর যাতে কোনওরকম হামলা না হয়, সেই ব‌্যবস্থা তাঁরা করেন। ধৃত আব্বাস বৈদ‌্য যাতে পালাতে না পারে, সেই ব‌্যবস্থাও করে এন্টালি থানার পুলিশ। ধৃতকে এন্টালি থানায় নিয়ে আসা হয়।

তামিলনাড়ু পুলিশের কাছ থেকে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে আব্বাস কলকাতা থেকে গিয়েছিল তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুরে। সেখানে এই রাজ্যের অনেক বাসিন্দাই কাজ করে। তাঁদের মধ্যে এক ১৪ বছর বয়সের নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় এই রাজ্যেরই অন‌্য এক পরিযায়ী শ্রমিকের। আব্বাস বৈদ‌্য তার পরিচিত ওই যুবকের সঙ্গে নাবালিকাকে একটি নির্জন জায়গায় ঘনিষ্ঠ হতে দেখে। একটু দূর থেকে নিজের মোবাইলে সেই দৃশ‌্য তুলে নেয় সে। এর পর থেকে আব্বাস ওই ভিডিওটি নাবালিকাকে ডেকে দেখিয়ে তাকে ব্ল‌্যাকমেল করতে থাকে। সে নাবালিকাকে কুপ্রস্তাব দেয়। নাবালিকা তাতে রাজি না হলে সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়া ও তার অভিভাবকদের কাছে ছড়িয়ে দেবে বলে জানায়। তার কথায় বাধ‌্য হয়ে নাবালিকা বিভিন্ন জায়গায় যায়।

আব্বাস তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এর মধ্যেই নাবালিকা অসুস্থবোধ করতে থাকে। অভিভাবকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, ওই কিশোরী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তামিলনাড়ুর চাইল্ড লাইনে অভিযোগ জানানো হয়। চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা তিরুপ্পুরের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে কিশোরীকে প্রশ্ন করতেই সে আব্বাসের কুকীর্তি সামনে নিয়ে আসে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইনে মামলা শুরু হয়। নাবালিকা সেখানকার আদালতে গিয়ে গোপন জবানবন্দি দেয়।

পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, অভিযুক্ত আব্বাস ও কিশোরীর সঙ্গে যার সম্পর্ক রয়েছে, তারা দু’জনই পলাতক। আব্বাসের মোবাইল নম্বর পরীক্ষা করে তামিলনাড়ুর পুলিশ জানতে পারে যে, সে কলকাতায় পালিয়েছে। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ শিয়ালদহে এসে জানতে পারে যে, এখানে ফল ব‌্যবসায়ীদের হয়ে কাজ করছে ওই পরিযায়ী শ্রমিক। এখানে রয়েছে তার স্ত্রী ও পরিবার। তাকে শনাক্ত করার পর পুলিশ শিয়ালদহে তাকে ধরে ফেলে। তার পরই শুরু হয় গোলমাল। এদিন শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে চার দিনের জন‌্য তার ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। তাকে জেরা করে অন‌্য পলাতককে ধরার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement