সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা মেট্রো রেলে যাত্রী দুর্ভোগ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। একের পর এক ট্রেন আচমকা বাতিল থেকে শুরু করে এসক্যালেটর অচল, কাউন্টারে টোকেন মেশিন বিকল-সহ এসি রেক খারাপের অভিযোগ তো ছিলই। এবার নতুন উপসর্গ, সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। রাতে তা মেরামত না করে দিনের বেলায় অফিস টাইমে ‘কাজ’ দেখাচ্ছে মেট্রো কতৃর্পক্ষ, অভিযোগ যাত্রীদের। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘামে ভিজে, চিড়ে চ্যাপটা হয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে মেট্রোর যাত্রীদের। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এদিকে জানিয়েছে স্বাভাবিক হতে অন্তত আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।
গত কয়েকদিন ধরেই অশান্তি চলছে। বৃহস্পতিবার সকালেও পরিস্থিতি চরমে পৌঁছয়। পৌনে দশটা নাগাদ গণ্ডগোলের সূত্রপাত। পরপর তিনটি ট্রেন বেশ দেরিতে আসে। দমদম বা কবি সুভাষগামী উভয়দিকের ট্রেনের ক্ষেত্রেই এক ছবি। ১০টা নাগাদ কবি সুভাষগামী ট্রেন শ্যামবাজার স্টেশনে ঢোকার পর বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। সেটি দেরিতে ছাড়ার কারণে পরপর দেরি করতে শুরু করে বাকিগুলিও। তাতেই দুর্ভোগ বাড়ে। ট্রেন না পেয়ে একই ট্রেনে ঠেসে উঠতে চান যাত্রীরা। তাতে দরজা আটকে যায়। ফলে ট্রেন ছাড়তেও দেরি হয়। অন্যান্য স্টেশনেও একই ছবি।
মেট্রো কর্তৃপক্ষর দাবি, রবীন্দ্রসদনে মেট্রো রেলের বিদ্যুৎ পরিবহণের সাব স্টেশনে আগুন লাগার ঘটনার জেরেই এই পরিস্থিতি। এক সপ্তাহ আগেই সেখানে আগুন লাগে। ওই সাব স্টেশনটি পুরোপুরি অকেজো হয়ে গিয়েছে। আপাতত তার মেরামতের কাজ চলছে। এভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণেই গোটা মেট্রো চলাচলের প্রক্রিয়াটাই পিছিয়ে গিয়েছে। যেখানে ৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় মেট্রো চলার কথা, সেখানে একটি সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় সেই গতিবেগ ১৫ কিলোমিটার কমানো হয়েছে। যার ফলেই পরপর পিছিয়ে যাচ্ছে ট্রেনের নির্ধারিত সূচি। অবস্থা সামাল দিতে না পেরে রাতে কবি সুভাষ ও দমদম থেকে শেষ মেট্রো ছাড়ার সময়ও বদলানো হয়েছে। ৯টা ৫৫ মিনিটের বদলে সেই ট্রেন এখন ছাড়ছে ১০টা ১৫ মিনিটে।
প্রশ্ন উঠেছে, যে কোনও কারণেই বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বিগড়োতে পারে। রবীন্দ্রসদনে মেট্রোর সাব স্টেশনেও তেমনই কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু যাই ঘটে থাকুক, সেই সমস্যা মেটাতে কেন দিনের বেলা অর্থাৎ মেট্রো চলার সময়কেই বেছে নেওয়া হয়েছে? কেন রাতে দ্রুত সেই মেরামতের কাজ করা হচ্ছে না? তাতে নির্বিঘ্নে কাজ করাও সম্ভব হয়। কাজে গতি বাড়ে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য যে ১০ দিন সময় লাগার কথা মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, সেই সময় আরও বাঁচানো যেতে পারে। এই নিয়ে অন্যান্যবারের মতো এবারও দায় এড়িয়ে গিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেই বলেছেন, অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে কম করে এক সপ্তাহ কেটে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.