Advertisement
Advertisement
Postal Department

গ্রামে সাফল্য পেলেও, ডাক থেকে মুখ ফেরাচ্ছে শহর! পোস্ট অফিসে আশঙ্কার তথ্য

গত অর্থবর্ষে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার ভরতুকি কেন্দ্রের। এবার তা আরও বাড়তে পারে।

The postal department of the country is running on huge losses
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:February 25, 2025 11:47 am
  • Updated:February 25, 2025 11:48 am  

সন্দীপ চক্রবর্তী: সার্টিফিকেট ইস্যুতে ও সেখান থেকে রাজস্ব আদায়ে ব‌্যর্থ শহর কলকাতা। গ্রামে সাফল‌্য কিছুটা এলেও শহরাঞ্চলে ডাক বিভাগের থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন মানুষ! এমন আশঙ্কার তথ‌্য উঠে এল। আর তা নিয়ে উদ্বেগে কেন্দ্রও।

কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত‌্য সিন্ধিয়া স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনও খামতি রাখা যাবে না। প্রতি জোনে কত নতুন অ‌্যাকাউন্ট তৈরি হল তার নির্দিষ্ট তথ‌্য দ্রুত জানাতে হবে। টার্গেট বেঁধে দেওয়ার কাজটা করছে কেন্দ্র। কলকাতা রিজিয়নে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট দশ লক্ষ ৮২ হাজার সার্টিফিকেট ইস্যুর লক্ষ‌্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু তথ‌্য বলছে, লক্ষ‌্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ হয়নি। তা সাকুল্যে চার লক্ষ ১৫ হাজার ৭৫৬। পোস্ট অফিস সেভিংস ব‌্যাঙ্ক থেকে রাজস্ব আদায়ও লক্ষ‌্যমাত্রার মাত্র ৩৮.৪২ শতাংশ পূরণ করেছে। শহর কলকাতার জিপিও, মধ‌্য, পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ ডিভিশনে সাফল‌্য তুলনামূলক কম বারাসত, বসিরহাট, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এমনকী, নদিয়ার দুই ডিভিশনের নিরিখেও। এর থেকেই স্পষ্ট, শহরাঞ্চলের মানুষ ডাক থেকে দূরে থাকছেন। জিপিও-তে আবার পুরনো অ‌্যাকাউন্ট তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেশি।

Advertisement

বস্তুত গত অর্থ বছরে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা ভরতুকি দিতে হয়েছে। এবার সেই সংখ‌্যাটা বাড়তে পারে। কেন্দ্র সরকারি হিসেব, গত অর্থ বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছিল, ব‌্যয় হয় প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যেই অ‌্যাকাউন্ট সংখ‌্যা বাড়ানোর চাপ দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ডাকঘরে। পোস্ট মাস্টারদের থেকে সেই চাপ স্বাভাবিকভাবেই নিচের তলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। শহরের গ্রামীণ ডাক সেবকদের কাছে সমস‌্যার চাপটা বেশি। কলকাতা রিজিয়নে ১২টি ডিভিশন রয়েছে। তথ‌্য বলছে, মূলত কিষান বিকাশ কেন্দ্র বা রেকারিং ডিপোজিটের মাধ‌্যমেই অ‌্যাকাউন্ট হয়। পোস্ট মাস্টার বা অফিসাররা অ‌্যাকাউন্ট খুললে বছরে অ‌্যাকাউন্ট পিছু ২১২ টাকা পান। এই টাকা দেয় অর্থমন্ত্রক। রেকারিং ডিপোজিট করলেও ১০০ টাকা। অ‌্যাকাউন্ট খোলার চাপে সেগুলি ভেঙে অর্থাৎ একটি থেকে দুই বা তিনটি করতে বলা হচ্ছে। ফলে মন্ত্রকের লাভ কমছে বা লোকসান বাড়ছে।

চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত কলকাতা রিজিয়নের মধ্যে বারাসত, বারাকপুর, বারুইপুর, কলকাতা পূর্ব, কলকাতা উত্তর, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা দক্ষিণে দশ লক্ষ করে সার্টিফিকেট করার টার্গেট রাখা হয়েছিল। সব থেকে কম ছিল অবশ‌্য কলকাতা জিপিও ডিভিশনে, ৬০ হাজার। মোট রাজস্ব টার্গেট ছিল ৮ কোটি টাকার, হয়েছে তিন কোটি সাত লক্ষ। সাফল্যের দিক থেকে প্রথমে বারাসত, ৬৫.২৬ শতাংশ। এরপর তালিকা অনুযায়ী বারাকপুর ৫২.৫৯ ও বারুইপুর ৫১.৭৮ শতাংশ। সব থেকে খারাপ অবস্থা কলকাতা জিপিও-তেই, মাত্র ৪.৭৩ শতাংশ। মাত্র ২৮৩৯টি সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। তা দুই লক্ষ টাকা মাত্র। মধ‌্য কলকাতা ডিভিশনও সাত লক্ষ টাকার। এখানে ৭২ হাজার সার্টিফিকেট ইস্যু করার টার্গেট রাখা হয়েছিল। পোস্ট অফিসগুলো মাত্র ৯৯৫০টিতে সাফল‌্য পেয়েছে। উত্তর কলকাতায় দশ লক্ষর টার্গেটে সাফল‌্য ২৯ হাজার ৩৫টি, রাজস্ব হিসাবে ২১ লক্ষ টাকার, ২৯.০৪ শতাংশ। দক্ষিণ কলকাতায় একটু মুখরক্ষা হলেও তা ৫০ শতাংশের থেকে কম। অর্থাৎ সরকারের পক্ষে ভরতুকি দিতে হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement