সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোদে পুড়ে, জলে ভিজে রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) সাউথ ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষ। কোনও গাড়িচালক নিয়ম ভাঙলেন কিনা সেদিকে শ্যেনদৃষ্টি তাঁর। এত কিছুর মাঝেও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা ভুলে যাননি তিনি। পরিবর্তে বছর আটের এক খুদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। পথের ধারেই দাঁড়িয়ে ওই শিশুর পড়াশোনার দেখভাল করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ‘শিক্ষক পুলিশ’। তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।
ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষ (Traffic Sergeant Prakash Ghosh), বালিগঞ্জ আইটিআইয়ের কাছে যান নিয়ন্ত্রণ করেন। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন বছর আটেকের ওই খুদেকে দেখেন। তার মা একটি খাবারের দোকানে কাজ করেন। মা এবং ছেলের বাস ফুটপাথেই। ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে চান ওই মহিলা। তবে সমস্যা একটাই খুদের পড়াশোনায় মন ছিল না এতটুকু। গল্পের ছলে ট্রাফিক সার্জেন্টকে সেকথা জানিয়েছিলেন ওই শিশুর মা। প্রকাশ শুনে সাহায্যের আশ্বাস দেন।
তবে ট্রাফিক সার্জেন্টের প্রতিশ্রুতি সারবত্তাহীন বলেই ভেবেছিলেন খুদের মা। মাত্র কয়েকদিন পরই চোখ প্রায় কপালে ওঠার জোগাড় তাঁর। একদিন তিনি দেখেন পড়াশোনায় চূড়ান্ত অমনোযোগী ছেলেই নাকি রাস্তার পাশে বইখাতা নিয়ে বসে আছে। সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ‘শিক্ষক পুলিশ’। তিনিই পড়াচ্ছেন। লিখতে দিচ্ছেন। উচ্চারণ কিংবা বানান ভুল হলে শুধরানোর দায়িত্বও তাঁরই কাঁধে। আবার হোমওয়ার্ক দিচ্ছেন। বাড়ির কাজ ওই খুদে পড়ুয়া ঠিকমতো করছে কিনা, তারও খোঁজ নেন প্রকাশ। নিত্যদিন নিজের কাজ সামলে এভাবেই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রটিকে পড়াশোনা করিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পরনে ঊর্দি আর পায়ে গেটার্স থাকায় বসতে পারেন না। তাতেও কিছুই যায় আসে না প্রকাশের। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই চলে শিক্ষকতা।
কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে ছবিটি শেয়ার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সামাজিক দায়িত্ব পালনকারীর ছবি ভাইরাল হতে বিশেষ সময় লাগেনি। ‘শিক্ষক পুলিশে’র কাজ মন ছুঁয়েছে নেটিজেনদের। মুগ্ধ সকলে। ট্রাফিক সার্জেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই খুদের মা-ও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.