সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: ভিড় বাসে অসহায় হয়ে পড়েছিল ৯ বছরের শিশু। কারণ, দাদা যে নেমে গিয়েছে তাকে ছাড়াই। কী হবে, ভয়ে কাঁদতেই থাকে সে। এদিকে অমানবিক কন্ডাক্টর হ্যাপা সামলাতে না চেয়ে সাউথ সিটি মলের কাছে বাস থেকে নামিয়ে দিয়েছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে। ব্যস! কান্না আর থামে না। তখন সাক্ষাৎ দেবদূতের মতো উদ্ধারে এলেন দুই ‘পুলিশ কাকু’। কিন্তু তারা লজেন্স-চকোলেট দিয়েও কান্না থামাতে যখন ব্যর্থ হচ্ছিলেন, তখনই তাঁদের চোখে পড়ে শিশুটির ইউনিফর্মে আটকানো ব্যাচে রয়েছে স্কুলের নাম, ফোন নম্বর। সেই দেখে নাম, পরিচয় জানতে পারেন কলকাতা পুলিশের দুই ট্রাফিক সার্জেন্ট। তাঁরাই তারপর বাইকে চাপিয়ে সেই পথভোলা শিশুকে বাড়ি পৌঁছে দেন। ফের একবার কলকাতা পুলিশের মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তাঁরা।
দুই ট্রাফিক সার্জেন্ট সপ্তর্ষি ব্রহ্ম এবং দীপ্তেন্দু হালদার। যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত দুই সার্জেন্টের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। শনিবার তাঁদের জন্যই একরত্তি সুস্থভাবে বাড়ি পৌঁছতে পেরেছে। জানা গিয়েছে, ভবানীপুরে থাকে ওই শিশুটি। ভবানীপুরেরই আদর্শ হিন্দি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে সে। এদিন দাদার সঙ্গে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল সে। ভিড় বাসে দাদার হাত ফসকে যায় সে। আর দাদাও নেমে যায় বাস স্টপে। বোন যে নামতে পারেনি তা পরে খেয়াল হয় কিশোরের। এদিকে ভিড় বাসে কাঁদতে শুরু করে ওই শিশু। তারপর ঠেলা সামলানোর চক্করে না গিয়ে অমানবিকতার পরিচয় দেয় কন্ডাক্টরও। সাউথ সিটি মলের কাছে ওই শিশুকে নামিয়ে দেয় সে।
[ছেলের আত্মহত্যায় মানসিক অবসাদ, বহুতল থেকে মরণঝাঁপ মহিলার]
এরপর রাস্তার ধারে ওই শিশুকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন দুই ট্রাফিক সার্জেন্ট। কান্না দেখেই আঁচ করতে পারেন কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে। লজেন্স-চকোলেট দিয়েও শিশুকে শান্ত না করতে পেরে প্রায় হতাশই হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। তখনই শিশুর ইউনিফর্মের ব্যাচে স্কুলের নাম, ফোন নম্বর লক্ষ্য করেন তাঁরা। স্কুলে ফোন করে শিশুর পরিচয়, বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করেন তাঁরা। তারপর সুস্থ শরীরে ওই শিশুটিকে বাড়ি পৌঁছে দেন তাঁরা। শহরে যেভাবে ছেলেধরা গুজব রটছে সেই জায়গায় এদিন মারাত্মক কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কিন্তু দুই পুলিশ কাকু মুশকিল আসান হয়ে একরত্তির সাহায্যে চলে আসেন।
[চিনা মাঞ্জায় ফের বিপদ, মা উড়ালপুলে রক্তাক্ত বাইক চালক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.