ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নজিরবিহীন ঘটনা। দলের পুরনো কর্মী হওয়া সত্ত্বে যথাযথ সম্মান, গুরুত্ব পাচ্ছেন না, এই অভিযোগ তুলে বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় তৃণমূল (TMC) ভবনের সামনে হাজির কয়েকশো দলীয় কর্মী। ভবনের সামনে দলের পতাকা নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ, অবস্থান। শেষমেশ দলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সির (Subrata Bakshi) হস্তক্ষেপে জট কাটে। আগামী সপ্তাহে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলে অবস্থান উঠে যায়। তবে খাস তৃণমূল ভবনের সামনে দলীয় কর্মীদের এমন বিক্ষোভ আগে কখনও দেখা যায়নি বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
দলের পুরনো কর্মীরা যথাযথ সম্মান পাচ্ছেন না। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ বহুদিন ধরেই উঠছিল। অভিমানে তাঁরা দল থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন। বাস্তবটা বুঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তাঁদের কাছে টানার বার্তা দেন। বারবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেছিলেন, যেন তাঁদের দায়িত্ব দিয়ে ফের দলে সক্রিয় করা হয়।
সেই বার্তায় কতটা কাজ হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হল শনিবার তৃণমূল ভবনের সামনের ছবিতে। বেলার দিকে মেদিনীপুর থেকে দার্জিলিং – বিভিন্ন প্রান্তের কয়েকশো কর্মী জড়ো হলেন শাসকদলের সদর দপ্তরের সামনে। নিরাপত্তারক্ষীরাও তাঁদের সরাতে পারেননি। সারা দুপুর তৃণমূল ভবনের সামনের রাস্তা দু’ধারে তাঁরা অবস্থান করেন। কখনও কখনও স্লোগান তুলে বিক্ষোভও দেখান। বারবারই দাবি করতে থাকেন যে তাঁরা নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকেই সমস্যার কথা জানাবেন।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁদের বক্তব্য, ”আমরা দলের বহু পুরনো কর্মী। কিন্তু তেমন গুরুত্ব পাচ্ছি না। ভোট কিংবা দলের অন্যান্য কাজে আমাদের ডাকা হচ্ছে না। তাই আমরা নেত্রীর কাছে জানতে এসেছি, এর কারণ কী। আমরা আবার ভোটের কাজ করতে চাই আগের মতো। আমাদের দলকে ফের ক্ষমতায় আনতে চাই।”
এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামেন সুব্রত বক্সি। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন, অভিযোগের কথা শোনেন। তারপর জানান যে আগামী বৃহস্পতিবার তাঁদের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তিনি নিজে আলোচনায় বসবেন। সমস্ত শুনে সমাধানের চেষ্টা করবেন। এতে খানিকটা আশ্বস্ত হন দলীয় কর্মীরা। অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে ফিরে যান। শনিবার তৃণমূল ভবনের সামনের এই ঘটনার পর শাসকদল কোন পথে হাঁটে, সেটাই এখন দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.