রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পার্টি ক্ষমতায় নেই। লোকবল কমে গিয়েছে। জেলায় জেলায় সংগঠনের জোরও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে যুব সংগঠনের ব্যানারে ব্রিগেড ডাকা কতটা যুক্তিযুক্ত? ব্রিগেড না ভরলে লোকসভা ভোটের আগে পার্টির মুখ পুড়বে না তো? বিভিন্ন জেলা পার্টি থেকেই এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে আলিমুদ্দিনকে।
অনেকের কথায়, ছাত্র-যুব সমাবেশ ডেকে ধর্মতলা ভরানো আর ব্রিগেড ভরানো এক বিষয় নয়। তার উপর পার্টির এখন দুঃসময়। পার্টি সূত্রে খবর, এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই যুবদের ব্রিগেড হলেও, পার্টির ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক সব ফ্রন্ট, অর্থাৎ পুরো পার্টির লোকজন দিয়েই ভরাতে হবে মাঠ। রাজ্য সিপিএমের তরফে এমনই সার্কুলার গিয়েছে জেলা কমিটিগুলির কাছে। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে ৭ জানুয়ারি ডিওয়াইএফআইয়ের ব্রিগেড ডাকা হয়েছে। প্রশ্ন, এককভাবে যুব সংগঠনের ব্রিগেড কেন? বামফ্রন্টের ব্রিগেড ডাকলে জমায়েত ভালো হত। তাহলে কি লোকসভা ভোটের আগে আবার কোনও ব্রিগেড বামফ্রন্টের তরফে ডাকা হবে? না কি সিপিএমের যুব সংগঠনের ব্যানারে একটাই ব্রিগেড হবে?
তবে শুধু পার্টির মধ্যেই নয়, বামফ্রন্টের শরিকদের মধ্যেও এই প্রশ্ন রয়েছে। তাদের এড়িয়ে এককভাবে সিপিএম যুবরা কেন ব্রিগেড ডাকল। অন্যান্য বাম দলগুলির ছাত্র-যুব সংগঠনও ছিল। সম্প্রতি এসইউসিআই ব্রিগেডে সভা করে যে সাহস দেখিয়েছে তা এই মুহূর্তে কোনও বাম দলের দেখানোর সাহস নেই। কিন্তু বামফ্রন্টগতভাবে তো ডাকা যেতে পারত, মনে করছে বাম শরিকদলের নেতাদের একাংশ। বাম ঐক্যের কথা ভেবে প্রকাশ্যে তারা এ বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ। ফলে ব্রিগেডের সভায় শরিকদের এড়ানো নিয়ে একটা বিতর্কের সৃষ্টি যে হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, ডিওয়াইএফআই স্বতন্ত্র সংগঠন। তারা এককভাবে ব্রিগেড ডাকতেই পারে।
সিপিএম পুরোদস্তুর না নামলে শুধু ছাত্র-যুবদের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে ব্রিগেড ভরানো যে সম্ভব নয় তা মানছেন অনেকেই। তাই সিপিএমকে পুরোদস্তুর নামতে হচ্ছে। দলের একাংশের কথায়, পার্টি নামলে ব্রিগেড হয়তো ভরবে কিন্তু বুথে লোক কই, ভোটবাক্সে ভোট কই? এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে সিপিএমের অন্দরে। তারা উদাহরণ হিসাবে দেখাচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-মিছিলে গ্রামে-গঞ্জে, আলপথে মিছিলে লোক হয়েছে। কিন্তু তার প্রতিফলন ভোটবাক্সে পড়েনি। সর্বশেষ ধূপগুড়ির উপনির্বাচন। যেখানে আবার বামফ্রন্টের জমানত জব্দ। ফলে পার্টির ওই অংশের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, সভা-সমাবেশে লোক হচ্ছে। কিন্তু তারা ভোট দিচ্ছে কোথায়? ভোট তো চলে যাচ্ছে তৃণমূল আর বিজেপিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.