সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে অশান্ত হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। তার আঁচ কিছুটা পড়েছিল এরাজ্যেও। মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু-একটি জায়গায় অশান্তি থেকে প্রাণহানিও ঘটেছে। তবে এই উত্তেজনা খুব বেশি স্থায়ী ছিল না। পুলিশ শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে। কিন্তু তারপরও পুলিশ প্রশাসনের চূড়ান্ত ব্যর্থতাকে এই অশান্তির নেপথ্যে দায়ী করে দিল্লিতে রিপোর্ট পেশ করা হল রাজভবনের তরফে। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী – শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও ব্রাত্য বসু। দু’জনেরই বক্তব্য, রাজ্যপাল দিল্লির নির্দেশেই এহেন ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদে কোনও অশান্তি নেই, আগামী দিনেও থাকবে না।
সূত্রের খবর, সদ্যই মুর্শিদাবাদ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাতে অশান্তির ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ এবং ‘প্রশাসনের ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এমনকী রিপোর্টে তাঁর সুপারিশ, প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যদি এভাবে ব্যর্থ হয়, তাহলে কেন্দ্র সরকার সংবিধান অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। তাঁর ইঙ্গিত ৩৫৬ ধারার জারির দিকে, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। মালদহ, মুর্শিদাবাদের স্পর্শকাতর এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প থাকা উচিত বলেও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। যদিও অশান্তির পর এই দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তা যে যুক্তিপূর্ণ, সেটাই রাজ্যপাল রিপোর্টে জানিয়েছেন দিল্লিকে।
তবে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এহেন ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট মোটেই ভালোভাবে গ্রহণ করেনি রাজ্য প্রশাসন। শাসকদলের তরফে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। কটাক্ষ করে কৃষি ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টপাধ্যায় বলেন, ”রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিরপেক্ষতা নিয়ে চলেন না। তিনি চলেন দিল্লির ইনস্ট্রাকশনে। রাজ্যপাল যা বলবেন, সব কথা নেগেটিভ বলবেন।” কটাক্ষের সুর আরও কিছুটা বেশি ব্রাত্য বসুর কথায়। বললেন, ”রাজ্যপাল অসুস্থ, তাড়াতাড়ি সেরে উঠুক তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার মুর্শিদাবাদ যাবেন। সেখানে কোনও সমস্যা নেই আর আগামিকালও থাকবে না।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজভবন-নবান্নের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.