ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বর্ষশেষে রাজ্যে করোনার নতুন স্ট্রেনের (Corona Virus New Strain) হানা। গত ১৫ দিনে লন্ডন ফেরত সংক্রমিত তরুণের সংস্পর্শে এসেছেন অন্তত ৫৯০ জন। ইতিমধ্যে ‘কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং'(Contact Tracing) -এর মাধ্যমে তাঁদের চিহ্নিত করেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাঁদের। এবার প্রয়োজনে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করে তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হতে পারে বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর।
মঙ্গলবার গভীররাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে মেইল করে জানানো হয়, বাংলার এক তরুণের দেহে করোনার নয়া স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, ব্রিটেন থেকে ফেরার পর ওই তরুণ করোনা পজিটিভ হওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মেডিক্যাল কলেজে ভরতি রাখা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও উপসর্গ নেই।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, ব্রিটেন থেকে বিমানে কলকাতায় ফেরেন ওই তরুণ। বিমান যাত্রী, বিমানবন্দরের কর্মী মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ৫৯০ জন তাঁর সংস্পর্শে আসে। এই যুবক করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরই তাঁদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তাঁদের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “এতদিন তাঁদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছিল। এবার প্রয়োজনে ফের আরটিপিসিআর পরীক্ষা ও তাঁদের আইসোলেশন করা হতে পারে। মোটের উপর রাজ্যে এই সুপার স্প্রেডার স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে বদ্ধপরিকর স্বাস্থ্যদপ্তর।” ইতিমধ্যে তাঁরা জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
উল্লেখ্য, ব্রিটেন ফেরত বিমান কলকাতা বিমানবন্দরে আসতেই ৩২৬ জনের ব়্যাপিড টেস্ট করা হয়। নিয়মিত দপ্তর থেকে ফোন করে ওই বিমানযাত্রী ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা বিমানকেন্দ্রের কর্মীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছিল। তাঁদের জ্বর এসেছে কিনা, সর্দি-কাশি আছে কিনা, গা-হাত-পা ব্যথা, বমি হচ্ছে কি না-সমস্ত খোঁজ নেওয়া হত। এর মধ্যে ছ’জনের জ্বর-সর্দি-কাশি থাকায় আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে চারজনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। বাকি দুজনের আবার পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। অপরজন অর্থাৎ এই যুবকের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরই তাঁর জেনেমিক স্টাডি করাতে নমুনা দিল্লিতে পাঠানো হয়। ও যুবককে মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয়। এই গোটা বিষয়টি রিপোর্ট আকারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, ব্রিটেনের প্রাপ্ত করোনার এই নয়া স্ট্রেন আগেরটির চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। এর মৃত্যুহার বেশি না হলেও সংক্রমণ হার অনেকটাই বেশি। সেই সংক্রমণ এড়াতে আটঘাঁট বাঁধছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.