ফাইল ছবি
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পুরভোট শেষ হলেই বহু প্রতীক্ষিত জিটিএ (GTA) নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব শুরু করতে চায় রাজ্য। নবান্ন থেকে সেই ইঙ্গিত দিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের দলগুলিকে। তাছাড়া পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি দীর্ঘদিনের। জিটিএ-র পর গোটা রাজ্যের সঙ্গে সেই নির্বাচনপর্বও মিটিয়ে ফেলতে চায় রাজ্য সরকার।
অক্টোবরে কার্শিয়াং সফরে গিয়ে পাহাড় সমস্যা নিরসনে চিরকালীন রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সমস্ত দলকে একজোট হতে বলেছিলেন। কমিটি গড়ে বলে দিয়েছিলেন এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বসে যাবতীয় আলোচনা সেরে নিয়ে প্রয়োজনীয় ইস্যুর উপর জোর দিতে। পরে পাহাড় সমস্যার খুঁটিনাটি জানতে প্রাক্তন মোর্চা নেতা অনীত থাপার সঙ্গেও একাধিক বিষয়ে কথা বলেন। ততদিনে পাহাড়ে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নামে নতুন দল গড়ে নিয়েছেন অনীত। কলকাতায় এসে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে যান বিমল গুরুং-রোশন গিরিরা। বিশেষ করে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদন জানিয়ে যান।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নবান্ন থেকে পাহাড়ের নেতাদের কাছে সবুজ সংকেত যায় জিটিএ নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করার। সূত্রের খবর, রাজ্যের ১০৮টি পুরসভা ভোট করানোর পরই সেই পথে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক্ষেপ করবে সরকার। জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত স্তরে সেই উদ্যোগ নিতে বলে দিয়েছেন পাহাড়ের দলগুলির নেতৃত্বকে। জিটিএ-র নির্বাচন মিটতে মিটতে রাজ্যজুড়ে ২০০১ সালের পর থেকে স্থগিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হবে। তার আগে বাকি জেলাগুলির সঙ্গে পাহাড়ের পঞ্চায়েত স্তরে সমন্বয় আনার কাজও সেরে নেওয়া হতে পারে বিধানসভায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে।
দার্জিলিংয়ে এই মুহূর্তে শুধু পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি স্তর। সংশোধনী এনে সেখানে জেলা পরিষদ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। অনীত থাপার কথায়, “আমরা চাই পঞ্চায়েত ভোটটা হোক। দুই বা ত্রিস্তরীয় যেমনই হোক, নির্বাচনটা হোক।” সরকারের বক্তব্য, পাহাড়ের দলগুলি একজোট না হলে সেখানে কোনও নির্বাচনের ফলাফলই মানুষের স্বার্থে হবে না। ফলে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
গত কয়েক মাসের মধ্যে পাহাড়ের সব থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বিনয় তামাংয়ের তৃণমূলে যোগদান। ফলে পাহাড়ে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে মোর্চা নেতা বিমলই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যদিও কোনও পক্ষের বিরুদ্ধেই প্রার্থী দেয়নি। দু’টি আসন ছেড়ে রেখেছিল মোর্চার দুই শিবিরের জন্যই। পাহাড়ের দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলাতে কোনওরকম তাড়াহুড়ো না করে, পাহাড়ের দলগুলোর উপর কিছু আরোপ না করে তাদের সময় দিতে চেয়েছিলেন মমতা। চেয়েছিলেন চিরকালীন সমাধানের পথে যেতে। সেই পথেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। রাজ্য সরকারের তরফে প্রশাসনিক সহযোগিতা আর তৃণমূলের বন্ধুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান সেই পথ প্রশস্ত করে। পাহাড়ের দলগুলির সমর্থন ফের তারা আদায় করে নিতে পেরেছে বলে মত শাসক শিবিরের। এই পরিস্থিতিতেই শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা জানায় অনীতের দলও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.