অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: তিলজলা কাণ্ড নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে। রাজ্য়ের শিশু সুরক্ষা কমিশনকে না জানিয়েই তিলজলায় মৃত শিশুর বাড়িতে পৌঁছে যান NCPCR-এর চেয়ারপার্সন-সহ গোটা টিম। ঘর বন্ধ করে শিশুটির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় সেখানে পৌঁছলে রাজ্য কমিশনের চেয়ারপার্সনকে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের লোক’ বলে কার্যত ‘ঘাড়ধাক্কা’ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পালটা কাজ না করতে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানও।
তিলজলায় রহস্যজনকভাবে খুন হয়েছে এক শিশু। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, খুনের পিছনে তান্ত্রিক যোগ রয়েছে। পরে সেই যোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব ও ডিজির কাছে চিঠিও পাঠিয়েছিল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। কিন্তু রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনকে না জানিয়ে তারা সরাসরি মুখ্য সচিব ও ডিজিকে রিপোর্ট চাওয়াতে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকী, জাতীয় শিশু সুরক্ষা প্রতিনিধি দল যে শহরে আসবে এ ব্যাপারে রাজ্য কমিশনকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। তিলজলায় শিশুখুনের ঘটনায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের শহরে আসার কোনও প্রয়োজন নেই বলে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় দিল্লিতে চিঠি পাঠিয়েছেন। তারপরেও এদিন তিলজলায় হাজির হয় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো।
মৃত শিশুর বাবা-মার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলছিলেন প্রিয়ঙ্ক। রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় সেখানে পৌঁছতেই প্রিয়ঙ্ক অভব্য় ব্যবহার শুরু করেন বলে অভিযোগ। সুদেষ্ণা রায়-সহ বাকিদের মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের লোক বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। পরে শিশুর বাবা-মাকে থানায় নিয়ে গেয়ে ১ ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। কিন্তু রাজ্য কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত থাকলে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে প্রিয়ঙ্ক কানুনগোর দাবি, “রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন আমাদের আসতে দিতে চায়নি। কেন? ওরা কি কিছু লুকোতে চাইছে? আমি স্পষ্ট করেছিলাম, একা কথা বলতে চাই। কিন্তু রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন গুন্ডারা ঘরে ঢুকে পড়ে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “এফআইআর করতে ১২ ঘণ্টা সময় নিয়েছিল পুলিশ।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সুদেষ্ণা রায়ের দাবি, “আমার সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক বলে কার্য়ত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। ওরা বলছে, আমরা কিছু লুকোনোর চেষ্টা করছি। আমাদের প্রশ্ন, ওঁরা কি তবে খুঁচিয়ে কিছু কথা বের করে আনতে চাইছে?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.