অর্ণব আইচ: ২১ থেকে ২৫ বছর। ‘তেজস্বিনী’দের দলে এই বয়সের যুবতীদের সংখ্যাই বেশি। তাঁদের কেউ বা সদ্য কলেজ পাশ করেছেন। কেউ বা এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণে তাঁদের উৎসাহই বেশি। যদিও আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে উৎসাহে কমতি নেই ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মহিলাদেরও। তাঁদের মধ্যে অনেকেই গৃহবধূ। প্রত্যেকদিন তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিতে হয়। আবার অনেকেই চাকরি করেন।
[গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারে মৃত্যু পড়ুয়ার, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ পরিবারের]
শনিবার থেকে শুরু হল রাজ্যের ‘তেজস্বিনী’দের প্রশিক্ষণ। কখনও রাস্তায়, আবার কখনও চলন্ত বাস, অটো বা মেট্রোয় রোমিওদের উৎপাতের সামনে পড়তে হয় মহিলাদের। প্রায়ই ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির শিকার হন বহু কিশোরী বা যুবতী। অনেক সময় রোমিওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান কেউ। আবার কখনও শ্লীলতাহানির শিকার হয়েও সংকোচে কুঁকড়ে যান অনেকে। এবার থেকে শহরের মহিলারা যাতে শ্লীলতাহানি বা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, তার জন্য শনিবার থেকে শুরু হল কলকাতা পুলিশের এই নতুন প্রয়াস ‘তেজস্বিনী’।
বুধবার পর্যন্ত প্রত্যেকদিন সকাল সাতটা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য ময়দানের পুলিশ অ্যাথলেটিক ক্লাবে মহিলাদের দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। তার জন্য কয়েকদিন আগে থেকেই আবেদন করতে শুরু করেন বিভিন্ন বয়সের মহিলারা। জানা গিয়েছে, ৩৫৮ জন এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৫ বছর বয়সের কিশোরী। ৭০ জনের বয়স ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে প্রত্যেকেই স্কুল ও কলেজের ছাত্রী। ১২৫ জনের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। ২৬ থেকে ৩০ বছরের ৬২ জন মহিলা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ৬৬ জন ‘তেজস্বিনী’র বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। সাধারণত কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকা থেকেই মহিলারা আসছেন প্রশিক্ষণ নিতে। কিন্তু বাঁকুড়া বা পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলি থেকে যখন মহিলাদের আবেদন আসতে শুরু করে, তখন আর লালবাজারের কর্তারা তাঁদের ফিরিয়ে দিতে পারেননি। তাই দূরের জেলা থেকেও মহিলারা এসেছেন প্রশিক্ষণ নিতে।
লালবাজারের এক কর্তার মতে, দেখা যাচ্ছে, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মহিলারাই বেশি ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির শিকার। সম্প্রতি রাতে লেক এলাকায় অটোর ভিতরে সহযাত্রীদের হাতে যে যুবতীর শ্লীলতাহানি হয়, তাঁর বয়সও ছিল ২৫ বছরের মধ্যে। আবার কিছুদিন আগে ধূমপান করায় যে দুই যুবতীকে অটোয় এক ব্যক্তি শ্লীলতাহানি করে অভিযোগ। তাঁরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাঁদের বয়সও ২৫-এর মধ্যে। সম্ভবত সেই কারণে এই বয়সের যুবতীদের মধ্যেই আত্মরক্ষার পদ্ধতি শেখার ইচ্ছা বেশি।
লালবাজারের কর্তাদের মতে, রাস্তা বা চলন্ত গাড়িতে রোমিওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেই অনেক কাজ হয়। সেখানে ‘তেজস্বিনী’রা আত্মরক্ষার পদ্ধতি জানলে তাঁদের সাহস অনেকটাই বেড়ে যাবে। পরবর্তীকালে আরও মহিলা এই ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে উৎসাহ পাবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছবি – আশুতোষ পাত্র
[রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.