সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভেজাল ওষুধের শিকড় উপড়ে ফেলতে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য দপ্তর। শনিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এই তথ্য জানিয়েছেন। জাল ওষুধের কারবার রুখতে সব সরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল স্ট্রোরকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার পদ্ধতি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নিগম জানিয়েছেন। এদিনই রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসার এবং স্বাস্থ্য সচিব গোটা অবস্থা নিয়ে মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, যেসব ওষুধ হাসপাতালে নিয়মিত দরকার হয়, প্রতি বছর তার তালিকা তৈরি হয়। এরমধ্যে কিছু ওষুধ যেমন অস্ত্রোপচার করতে দরকার, আবার জ্বর সর্দি থেকে হৃদরোগ, সেরিব্রাল স্ট্রোক প্রতিরোধ ওষুধ মজুত রাখতে হয়। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, প্রায় ১ হাজার ৭০০ ওষুধ পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগ-ব্যাধি কমাতে দরকার হয়। আবার বিরল এবং অতি বিরল রোগের জন্য প্রায় ৩০০ বিভিন্ন গ্রুপের ওষুধ, ইনজেকশন আছে। তবে এই ওষুধ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে সংগ্রহ করতে হয়। স্বাস্থ্য ভবনের ওই আধিকারিক জানান, মেডিক্যাল কলেজ অথবা হাসপতালের সিনিয়র রেসড্যান্ট অথবা সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসকরা ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।
জানানো হয়েছে, প্রতিটি ওষুধ অথবা ইনজেকশন ব্যবহারের আগে ব্যাচ নম্বর নথিভুক্ত করতে হবে। দিনের শেষে তা হাসপতালের উপাধ্যক্ষ (মেডিক্যাল)কে পাঠাতে হবে। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সব তথ্য জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল আধিকারিক অথবা জেলাশাসককে পাঠাতে হবে। ভেজাল ওষুধ চিহ্নিত করতে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হবে।
উল্লেখ্য, হুগলি, বর্ধমান ও পরে কলকাতায়-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে সন্দেহভাজন ওষুধ ধরা পড়ার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র তথা রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। এখনও পর্যন্ত ৩০০টি ওষুধ ‘জাল’ ওষুধ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, প্রেসারের ওষুধ (টেলমা এএম), ডায়াবেটিস, ইনহেলার, ইনজেকশন-সহ বহুল ব্যবহৃত সব ওষুধ। সন্দেহভাজন ওষুধ কিনে সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারিত না হন সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই-এর তরফে কিউআর কোড পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনকে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও ওষুধ দোকানে এলে তার বিস্তারিত তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে ওষুধ বিক্রেতাকে। মিলিয়ে দেখতে হবে কিউআর কোড স্ক্যানে যে ৩০০টি নকল ওষুধ চিহ্নিত হয়েছে, তার সঙ্গে এই ওষুধগুলির যদি মিল থাকে তবে তা নকল বলে ধরে নিতে হবে। গ্রাহকরাও যাতে সতর্ক হন তাই দোকানেও ঝুলিয়ে রাখতে হবে এই কোড। কেন্দ্রের নির্দেশ মতো এবার সমস্ত ওষুধের দোকানে ও হোলসেলারদের গুদামে এই কিউ আর কোড সাঁটানোর নির্দেশ দিতে চলেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। যাতে ক্রেতা ও বিক্রেতা সব পক্ষই যাচাই করে নিতে পারেন ওষুধ। এবার ভেজাল ওষুধের শিকড় উপড়ে ফেলতে নয়া নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.