ফাইল ছবি।
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ঘরের ভিতর অপমানিত। কখনও অস্থায়ী, কখনও বা প্রাক্তন শুনে ‘অভিমানী’ অধীর চৌধুরী। রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে। কোন পথে হাঁটবেন মুর্শিদাবাদের এই কংগ্রেস নেতা? দ্বিধা এবং দ্বন্দ্বে ভুগছেন। নতুন পথের সন্ধান নাকি অপেক্ষা? কি করবেন অধীর চৌধুরী, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই আহ্বান জানিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলে অধীরকে নিয়ে আলোচনা চলছে। ভালো উদ্দেশ্যে তৃণমূলে যে কেউ আসতে পারে। ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার। অন্যদিকে, অধীরের হয়ে সওয়াল করেন মালদহের প্রাক্তন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। অধীরকেই সভাপতি রাখা হোক বলে দাবি করেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের পর মুর্শিদাবাদে অধীর মিথের পতন হয়েছে। বহরমপুর কেন্দ্রে বিপুল ভোটে ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হন। অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চর্চা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। এই আলোচনার মধ্যেই বিতর্ক আরও উসকে দেয় সোমবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সংগঠন কে সি বেণুগোপালের বৈঠক। বৈঠকের শুরুতেই অধীরকে প্রাক্তন সভাপতি বলে সম্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক গুলাম মীর। ঘর ভর্তি প্রদেশ নেতৃত্বের সামনে অপমানিত হয়ে কার্যত বৈঠক বয়কট করেন তিনি। নিজের বক্তব্য জানিয়েই দিল্লির আকবর রোডের এআইসিসি দপ্তর ছাড়েন অধীর চৌধুরী। জল্পনা শুরু হয় দলের অন্তরে। অধীর চৌধুরী প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে প্রচার করা হয়। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন প্রাক্তন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা।
ঘরে-বাইরে চাপে পড়ে অধীর এবার নতুন পথের সন্ধান করতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু সে পথ কোন পথ তাই নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি কি দাঁত চেপে কংগ্রেসেই থাকবেন নাকি অন্য দলে নাম লেখাবেন? চলছে জল্পনা। বাংলা প্রবাদ অনুযায়ী যদি ‘আগা ও ছালা’ দুই যায় তাহলে কি করবেন অধীর? আবার প্রদেশ কংগ্রেসেও মাথাচারা দিয়েছে গোষ্ঠীকোন্দল। একপক্ষ অধীরের বদলে এখনই নতুন সভাপতি ঘোষণার দাবি জানিয়ে এসেছে হাইকমান্ডের কাছে। আরেকপক্ষ অধীরের পক্ষে এখনও ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, অধীরকে বার্তা দিতে শুরু করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। মঙ্গলবার বিজেপির তরফে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। বুধবার, সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য জানান, ওনাকে আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি অধীর চৌধুরী সঠিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ভুল দলে রয়েছেন। এদিন তাঁকে নিয়ে মুখ খোলেন, একসময়ে অধীরের রাজনৈতিক শিষ্য ও কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিড। এদিন তিনি জানান, “একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হয়ে তা বুঝতে পারি। তখন তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় তিনি কি করবেন।” আবার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ নিয়ে যখন রাজ্যের কংগ্রেস শিবিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে, ঠিক তখনই অধীররঞ্জন চৌধুরীর পক্ষে সওয়াল করলেন মালদহের বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ ডালুবাবু বুধবার এই বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কার্যত অধীরের সমর্থনে বলেন, “জোর করে তো কাউকে রিজাইন করানো যায় না। অধীরই থাকুক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.