রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই অর্ন্তকলহে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি। ‘বেসুরো’ গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতা। এহেন পরিস্থিতিতে আবারও শিরোনামে যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। এবার তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির মহিলা সদস্যরা। অভিযোগ, ফোন করে তাঁদের কাজ না করতে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন সৌমিত্র খাঁ। এমনকী প্রকাশ্যে তাঁদের অসম্মানও করা হচ্ছে। অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়ে তাঁরা চিঠি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)।
চিঠিতে মহিলা কর্মীরা লিখেছেন, “বর্তমানে যুব মোর্চায় যে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে ব্যাপারে যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য হিসেবে আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মাননীয় সাংসদ তথা রাজ্য যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan) মহাশয় যুব মোর্চাতে একনায়কতন্ত্র নীতি চালাচ্ছেন। বারবার ভারতীয় জনতা পার্টির রীতিনীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের ইচ্ছামতো পার্টিতে সদ্য যোগ দেওয়া মহিলাদের সরাসরি যুব মোর্চার কোর কমিটিতে পদাধিকার দিচ্ছেন। ফলে উপেক্ষিত হচ্ছেন বহু লড়াইয়ের সঙ্গী পুরনো মহিলা কার্যকর্তারা। শুধু তাই নয়, অসম্মান করার জন্য যুব মোর্চার অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের মতো মহিলা কার্যকর্তাদের সরিয়ে দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। দলীয় কাজকর্মে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী ফোনে হুমকিও দিচ্ছেন, পার্টি করতে দেবেন না বলে। সৌমিত্র খাঁ সভাপতি থাকাকালীনই সহ-সভাপতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রকাশ্যে মারামারি হচ্ছে, খুনের হুমকি চলছে। সব মিলিয়ে এক দম বন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা মহিলা কার্যকর্তারা হুমকি ও প্রকাশ্যে সম্মানহানির শিকার হচ্ছি। সস্তা প্রচার পাওয়ার জন্য দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে স্ক্রিনশট আকারে তুলে ধরছেন তিনি। যা দলীয় সংবিধান বিরোধী। এমতাবস্থায় আপনার কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, অবিলম্বে এই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে যুব মোর্চাকে রক্ষা করুন এবং আমাদের মতো মহিলা কার্যকর্তাদের সম্মানরক্ষা করুন। আর আপনি অপারগ হলে আমাদের সম্মান রক্ষার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি দিন।” বনশ্রী মণ্ডল, ঝিলাম বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা শর্মা-সহ অনেকেই এই চিঠিতে সই করেছেন।
উল্লেখ্য, দিন দুয়েক আগে মৌমিতা সাহা নামের এক নেত্রীকে রাজ্য সম্পাদক নিয়োগ করেন সৌমিত্র খাঁ। তারপর বুধবার তাঁকে যুব মোর্চার অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করার নির্দেশ দেন। আর নয়া নম্বর যোগ হতেই দানা বাঁধে বিতর্ক। যুব মোর্চার কর্মীদের একাংশের আক্রমণের মুখে পড়েন তিনি। সদ্য সংগঠনে আসা, অভিজ্ঞতা নেই এরকম কাউকে সরাসরি রাজ্য সম্পাদক কেন করা হল তা নিয়ে ক্ষোভ যুব মোর্চার রাজ্য নেতাদের বড় অংশের। বিজেপিতে এ ভাবে সাংগঠনিক নিয়োগের ঘোষণা হয় না। সেই ঘটনার রেশ টেনেই এবার সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে চিঠি লিখে দিলীপ ঘোষের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির মহিলা সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.