সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষার বৃ্ষ্টি পরিবেশকে ভিজিয়ে যখন ভ্যাপসা গরমকে বিদায় জানায়, শরীরের সঙ্গে ঠান্ডা হয় মনও। বর্ষা যেমন মানুষের অন্যতম প্রিয় ঋতু, তেমনই এই বর্ষাই নিজের সঙ্গে বয়ে নিয়ে আসে হাজারো রোগ-ব্যাধী। প্রতি মুহূর্তে থাকে সংক্রমণের ভয়। বিশেষ করে এই মরশুমে শিশুদের নানা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে। শরীরে ব়্যাশ বেরনো, পেট খারাপ, ভাইরাল সংক্রমণ, মশার কামড় থেকে রোগ, টাইফয়েডের মতো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় সদ্যোজাতরা। নিঃসন্দেহে এ মরশুমে অভিভাবকরাও সন্তানের দিকে একটু বেশিই নজর রাখেন। কিন্তু অনেক সময়ই বুঝে উঠতে পারেন না কোন জিনিস থেকে কোন রোগটি হচ্ছে। কিংবা কীভাবে সন্তানকে সবরকম অসুখ থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। এই প্রতিবেদনে রইল এমনই সাতটি টিপস।
১. শিশুর ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সামান্য অসাবধানতা থেকেও ব়্যাশ, ফুসকুরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যা থেকে ইনফেকশন হতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, সন্তানদের শুধুমাত্র দেখতে সুন্দর লাগবে বলে তাকে সারাক্ষণ পোশাক পরিয়ে রাখার দরকার নেই। শিশু মাত্রই সুন্দর। টাইট পোশাক একেবারেই নয়। ঢিলেঢালা, হালকা সুতির পোশাকেই আরাম বোধ করে বাচ্চারা। ঠান্ডা লাগলে হালকা জ্যাকেট পরানো যেতে পারে। সন্তানের ঘুমের সময় হালকা ল্যাপ ব্যবহার করুন।
২. সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার জরুরি। এই মরশুমে টাইফয়েডের আশঙ্কা থেকেই যায়। ভেজাল খাওয়া আর পর্যাপ্ত জল পানের অভাবেই সাধারণত টাইফয়েড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬ মাসের কম বয়সি শিশুদের স্তন্যপানই তাদের সবরকম সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে। আ-ঢাকা খাবার কিংবা বাইরের খাবার নৈব নৈব চ। সন্তান জল পান শুরু করে থাকলে অবশ্যই তা যেন ফিল্টার করা এবং গরম করা হয়। সন্তানের সঠিক পুষ্টির জন্য দু’বছর কিংবা তার বেশি বয়স পর্যন্ত সন্তানকে স্তন্যপান করানো যেতেই পারে।
৩. যাঁদের ত্বকের রোগ আছে, তাঁদের থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন। অল্পতেই সদ্যোজাতদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪. সন্তানের নখ বেড়েছে? খতিয়ে দেখুন তো। বাড়লে তা অবশ্যই কেটে দিন। কারণ নখের ভিতরে জমে ময়লা। আর সেখান থেকেই ছড়ায় নানা অসুখ-বিসুখ। তাছাড়া ওই নখ দিয়ে শিশু নিজেই তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা চুলকাতে গেলে ত্বক ছিঁড়ে যায়।
৫. শিশু হামাগুড়ি দিতে শিখলে আর রক্ষে নেই। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়াবেই। তাই আপনাকেও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ বাড়ির মেঝেতে বাস অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়ার। আর তা থেকে রোগ-ব্যাধীর সম্ভাবনাও থেকে যায়। যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। দিনে একবার সাবান মাখিয়ে বাচ্চাকে স্নান করানো জরুরি। আর হাত ধোয়ানোর জন্য ব্যবহার করুন হ্যান্ডওয়াশ। এতে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু দূরে থাকবে।
৬. সন্তান যেন কোনও সময়ই ভিজে না থাকে। অর্থাৎ ডাইপারে মল-মূত্র ত্যাগ করলে তা তাড়াতাড়ি বদলে দিন। এ থেকেই ত্বকে ব়্যাশ হতে পারে। শরীরের খাঁজে ঘাম জমতে দেবেন না। তারা অস্বস্তিও বোধ করে।
৭. সবচেয়ে বেশি যেটা জরুরি তা হল শিশুর আশপাশ সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাড়ির চারদিকে জমা জল যেন না থাকে। থাকলে মশা ও পোকামাকড় হয়। সন্তানকে অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করতে ফ্লোর ক্লিনার ব্যবহার করে মেঝে পরিষ্কার রাখুন। আর বাচ্চা অসুস্থ বোধ করলে এড়িয়ে যাবেন না। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.