ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: সংগীত জগতের তিন স্তম্ভ কিশোর-হেমন্ত-মান্নার ‘ফুল মার্কস’ পাওয়া ফুলবাড়ির ‘লালমোহন’কে এবার জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠল। ওড়িশাকে হারিয়ে রসগোল্লা যে বাংলার তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এবার উত্তরবঙ্গের অন্যতম মৌলিক মিষ্টি হিসাবে রসে টইটম্বুর ‘লালমোহন’ নির্মাতারাও নিজস্বতা আদায়ে জিআই স্বীকৃতি চাইছেন। তবে তাঁরা একা নন। এই লড়াইয়ে রয়েছে বেলাকোবার চমচমও। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব গিয়েছে। রাজ্যের কাছে এই দুই মিষ্টির সফরনামা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের কথায়, “মানুষের রায়ে ইতিমধ্যে ফুলবাড়ির লালমোহন কিংবা বেলাকোবার চমচম উৎকৃষ্টতা প্রমাণ করেছে। এবার জি আই তকমা পাওয়াটাই লক্ষ্য।”
[ঘরোয়া কাজে ঠান্ডা পানীয়র এই কেরামতির কথা জানেন?]
৭০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা রেসিপি দিয়ে শিলিগুড়ির ফুলবাড়িতে লালমোহন বানানো শুরু করেছিলেন মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মণীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেই পথ চলা শুরু। ময়দার সঙ্গে ছানা মেখে গোল বল তৈরি করে তেলে ভেজে রসে ডুবিয়ে তৈরি করা হয় লালমোহন। আপাতভাবে মনে হতেই পারে, এতে আর বিশেষত্ব কী। কিন্তু খানিকটা কালচে লাল রঙের এই মিষ্টির স্বাদ নিতে ছুটে এসেছেন বহু সেলিব্রিটি।
সেই তালিকায় যেমন কিশোর কুমার, লীনা চন্দ্রভারকর রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বেলা মুখোপাধ্যায় থেকে অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, কোয়েল মল্লিক। এছাড়াও বহু বিশিষ্ট মানুষ উত্তরবঙ্গে এসে এই মিষ্টিতে মজেছেন বলে দাবি বর্তমানে লালমোহনের নির্মাতা রতন ঘোষের। তিনি বলেন, “কারিগর আছেন। তাঁরা বিভিন্ন মিষ্টি তৈরি করেন। কিন্তু লালমোহন তৈরির রেসিপি শুধু আমারই জানা।”
যাতে রেসিপির কথা পাঁচ কান না হয়, তাই নিজেই তৈরি করেন এই মিষ্টি। রতনবাবু বলেন, “বতর্মানে মিষ্টি নকল করার প্রবণতা বাড়ছে। অনেকেই একই নামে লালমোহন তৈরি করে বিক্রি করছেন। তাই স্বকীয়তা বজায় রাখতে জিআই স্বীকৃতি দরকার। এজন্য আবেদন করছি। সেইমতো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছি।”
[টানা ৩ দিন নয়, এবার শুধু বুধ-বৃহস্পতি ছুটি বিশ্বভারতীতে]
রসগোল্লার জিআই স্বীকৃতি মেলায় উৎসাহিত হয়েছেন রতনবাবুরা। বংশপরম্পরায় চলে আসা মিষ্টান্ন তৈরির রসায়নকে যে এভাবে সুরক্ষিত করা যেতে পারে তা জানা ছিল না অনেকেরই। রসগোল্লা সেই দরজা খুলে দিয়েছে। আর সেকারণেই জিআই পেতে উৎসাহী উত্তরবঙ্গের আরেক জনপ্রিয় মিষ্টি বেলাকোবার চমচম। টাঙ্গাইলের কড়াপাকের চমচমের ধাঁচে তৈরি এই মিষ্টির জিআই পেতে উদ্যোগী হয়েছেন মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। বেলাকোবা নাগরিক সমিতির তরফে এনিয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের কাছে লিখিত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের আশা, স্বীকৃতি পেতে সমস্যা হবে না। আর এতে মিষ্টির গুণমানও বজায় রাখা সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে মিষ্টির জগতে অধিকার আদায়ে লড়াইয়ের নয়া ক্ষেত্র প্রস্তুত।
[ফুলশয্যার রাতে কামাল দেখানো ‘ভায়াগ্রা পান’ কোথায় পাওয়া যাবে, দামই বা কত?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.