সৌরভ মাজি, বর্ধমান: তন্দুরি চিকেন, তন্দুরি রুটির কথা ভোজনরসিকদের কাছে সুপরিচিত। এমন ভাল ভাল খাবারের নাম শুনলেই নাকি খিদে পেয়ে যায় কারও কারও। তন্দুরি নাইটসেও বেশ অভ্যস্ত শহর বর্ধমান। উৎসবের মরশুমে এবার তন্দুরি চায়ে মজেছেন প্রায় সকলেই।
[showad block=2]
চা। এক অক্ষরের এই শব্দ এখন রাজনৈতিক মহলেও চর্চার বিষয়। ‘চা-ওয়ালা’, ‘চায়ে পে চর্চা’ নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। আর বাঙালির চায়ের আড্ডায় তুফান তোলা তো সুবিদিত। আবার আশেপাশে কান পাতলে চা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ কথাও কম শোনা যায় না। দুধ চা খাবেন না, গ্যাস-অম্বল হবে। লিকার চা খান দাদা, যেন সর্বরোগহরা। না হলে লেবু-চা, স্বাদেও ভাল, দারুণ উপকারী। গ্রীন টিও হালফিলে বেশ ভালই চলছে। চাইলে ফুটপাথের দোকানেও এই ধরনের চা-তে গলা ভেজাতে পারেন স্বাস্থ্যসচেতনরা।
পুজোর কেনাকাটা কিংবা প্রতিমা দর্শনে বেরিয়ে স্টপগ্যাপে চায়ে চুমুক দেওয়াই রেওয়াজ। বর্ধমান শহরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় চা দোকান বিখ্যাতও হয়ে উঠেছে। উৎসবের মরশুমে প্রায় ভিড়ে ঠাসা থাকে এলাকার চায়ের দোকানগুলি। মদনের চা, বংশীদার চা, ভাগ্নের চা, ময়নার চা শহর বর্ধমানে বেশ বিখ্যাত। এবারের পুজোর মরশুমে ওই দোকানগুলির চায়ের তালিকায় নবতম সংযোজন তন্দুরি চা। এই ধরনের চায়ের নামটা শহরবাসীর কাছে নতুন হলেও ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা। কল্লোলিনী তিলোত্তমার কাছে পুরনো হলেও মফস্বল বর্ধমানে পুজোর আগে এটাই যেন হটকেক।
এবার জেনে নেওয়া যাক কীভাবে তৈরি হয় তন্দুরি চা। মাটির বড় ভাঁড় গনগনে আঁচে পোড়ানো হচ্ছে। তারপর লাল হয়ে উঠলে সেটিকে একটি বড় পাত্রের উপর রাখা হচ্ছে। প্যানে বানানো চা তুলে এনে ফেলা হচ্ছে সেই বড় ভাঁড়ে। তারপরই খেল শুরু। বুদবুদ উঠছে। যেন থামতেই চায় না। চায়ের বাষ্পে ঢেকে যাচ্ছে। বুদবুদ ওঠা থামলে পাত্র থেকে চা নিয়ে মাটির ভাঁড়ে বা কাপে তা পরিবেশন করা হচ্ছে। ভরপুর পোড়া গন্ধে ম-ম করছে চারপাশটা।
সম্প্রতি শহরের কয়েকটি রেস্তরাঁয় প্রথম আমদানি করা হয় তন্দুরি চা। রাস্তার আশেপাশের দোকানগুলিতেও এখন এই ধরনের চায়ের রমরমা। কালনা রোডের জামতলা এলাকায়, জিটি রোডের একটি খাবারে দোকানে মিলছে এই চা। রেস্তঁরা ও রাস্তার ধারের দোকানের চায়ের গুণগত মানের ফারাক হয়তো চা-প্রেমীদের কাছে বিশেষ নেই। কিন্তু দামে তফাৎ রয়েছে অনেকটাই। দু’কাপ চায়ের দাম ৩০ টাকা। তবে নার্স কোয়ার্টার মোড়ের দোকানে অবশ্য তন্দুরি চা বেশ সস্তা। সেখানে এই চা মিলছে মাটির ভাঁড়ে। দাম ছোট ভাঁড় ৭ টাকা এবং বড় ভাঁড়ে ১৫ টাকা।
তন্দুরি চায়ের কাপে এক চুমুক দিলেই পোড়া মাটির গন্ধে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে চা-প্রেমীদের। চায়ের মৌতাত নিতে প্রাকপুজোতে এক্কেবারে হিট তন্দুরি চা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.