অভিরূপ দাস: গরুর দুধে (Cow Milk) বিপদ! গল্প নয় সত্যি। সঠিকভাবে গরুর দুধ জ্বাল না দিলে অসুখ বাসা বাঁধছে শরীরে। সে অসুখের নাম ব্রুসেলোসিস (Brucellosis)।
বনগাঁর সুদেষ্ণা মণ্ডল কিংবা বারুইপুরের ইলাদেবী। দুজনেরই উপসর্গ ছিল এক। ধুম জ্বর। সেখান থেকে গা হাত পায়ে অসহ্য ব্যথা। সেরোলজি টেস্ট করাতেই ধরা পড়ল সত্যিটা। ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা। শুধু ওই দু’জনই নন, গত দেড় মাসে বাঁকুড়া, মালদা, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়ার প্রায় ৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এই অসুখে। করোনা আবহে ব্রুসেলোসিসের বাড়বাড়ন্তে সতর্ক স্বাস্থ্যদপ্তর।
বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, নদিয়া বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বসিরহাটের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। যেখানে বলা হয়েছে, গ্রামে গবাদি পশুর সংস্পর্শে এসেছে এমন কারও টানা ৫/৭ দিন জ্বর থাকলে টেস্ট করাতে হবে। ব্রুসেলোসিস ধরা পড়লেই চালু করতে হবে ডক্সিসাইক্লিন ক্যাপসুল। দিতে হবে জেন্টামাইসিন ইঞ্জেকশন। অসুখ সনাক্ত করতে লাং ফাংশন টেস্ট, ইউরিয়া, এবং ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
করোনা আবহে এ কোন অসুখ? জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, ব্রুসেলোসিস ব্যাকটিরিয়া জনিত রোগ। এই ব্যাকটিরিয়া কোনও প্রাণীকে সংক্রমিত করলে তা সেই প্রাণীর শরীরে থাকে। ওই প্রাণীর মাংস অথবা দুধ গ্রহণ করলে তা মানুষের দেহেও সংক্রমিত হতে পারে। সে কারণেই রান্না না করে ডেয়ারি প্রোডাক্ট খেতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, আতঙ্কের কিছু নেই। এর জন্য সরকারের প্রকল্প আছে। গৃহপালিত পশুদের যাতে ওই ব্যাকটিরিয়া আক্রমণ না করে তাই তাদের টিকাকরণ করা হয়।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটকের কথায়, পাস্তুরাইজড ডেয়ারি প্রোডাক্ট থেকে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু যাঁরা গরুর দুধ, ছাগলের দুধ খান তাঁদেরই ভয়টা বেশি। ব্রুসেলা ব্যাকটিরিয়া সংক্রমিত পশুর দুধ না ফুটিয়ে পান করলে বা গবাদি পশুর বা তাদের মাংসের সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরেও ব্রুসেলা সংক্রমিত হয়। এতে গাঁটে গাঁটে ব্যথা, শিরদাঁড়া বা মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ ধরা না পড়লে পরে ক্রমশ শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হতে শুরু করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.