ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে চলছে করোনার মৃত্যুমিছিল। গঙ্গা ও যমুনায় ভেসে আসছে একরে পর এক মৃতদেহ। বিহার ও উত্তরপ্রদেশের পর মধ্যপ্রদেশের নদীতেও লাশ ভাসতে দেখা যাচ্ছে। ফলে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন উঠছে, নদী থেকে কি করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে? জলের মাধ্যম অন্য প্রাণীর শরীরে হানা দেওয়ার ক্ষমতা কি রয়েছে ভাইরাসটির?
চিকিৎসক ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির মতে, SARS-CoV-2 নামের করোনা ভাইরাসটি কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী। এই জীবাণুটি মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি ও জোরে কথা বলার সময় বের হওয়া ড্রপলেট বা জলকণা থেকে ছড়ায়। নিঃশ্বাসের সঙ্গে ওই জলকণা সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।প্রায় দুই মিটারেরও বেশি এই ড্রপলেট ছড়াতে পারে। অর্থাৎ জলে করোনা ভাইরাস দিব্বি বেঁচে থাকতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক বর্জ্য পদার্থে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। তবে সেই বর্জ্য থেকে সুস্থ মানুষ সংক্রমিত হতে পারে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট নয়। একইভাবে, নদী বা সুইমিং পুল থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সাফ জানিয়েছে, জলের মাধ্যমে করোনা ছড়ায় না। অন্যদিকে, করোনা রোগীর শরীর থেকে নিঃসৃত তরল পদার্থ যেমন–লালা, শ্লেষ্মা ও মূত্রের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে বলে তথ্য মিলেছে।
সব মিলিয়ে বিশ্লেষকদের মতে, মৃতদেহের মধ্যে নানা রকমের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফলে নদীতে লাশ ভাসালে দূষণ বাড়তে পারে। এখনও পর্যন্ত হওয়া গবেষণা মোতাবেক নদী থেকে করোনা ছড়ানো সম্ভব নয়। তবে এই আণুবীক্ষণিক জীবটির গতিবিধি নিয়ে আরও গবেষণা চলছে তাই এই বিষয়ে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আইসিএমআর ও ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গাইডলাইন মতে করোনায় মৃতদের দেহ বিশেষ ব্যাগে ভরে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। তারপর পিপিই কিট পরে নির্দিষ্ট জায়গায় বিশেষ সুরক্ষা নিয়ে তা সৎকার করতে হবে, মৃতের পরিজনদের দেহ ছুঁতে বা সেটির কাছে যেতে দেওয়া হবে না। মৃতের পরিজনদেরও পিপিই কিট পরে শ্মশানে আসতে হবে। সব মিলিয়ে, মৃতদেহ থেকে করোনা ছড়ানো বা না ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে এখনও আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.