সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহামারী ঠেকাতে চূড়ান্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে চিন প্রশাসন। সংক্রমণ ঠেকাতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের জন্য আলাদা করে হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। একসঙ্গে অন্তত এক হাজার জনের চিকিৎসা হতে পারবে। করোনার উৎপত্তিস্থল ইউহান প্রদেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। এক সপ্তাহের মধ্যেই হাসপাতালটি তৈরি করতে বদ্ধপরিকর জিনপিং সরকার।
বছরের প্রায় শুরু থেকেই চিনের ইউহানে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা চল্লিশ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হাজারেরও বেশি। যত দিন যাচ্ছে, ততই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তা রুখতে প্রথমে ইউহান এবং পরে আরও পাঁচটি প্রদেশকে গোটা দেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ওই সব জায়গায় বাস, ট্রেন, বিমান পরিষেবা বন্ধ। শুধুমাত্র মানবদেহের সংস্পর্শ থেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, পরীক্ষানিরীক্ষার পর গবেষকরা এই রিপোর্ট দেওয়ায় আরও সচেতন হয়েছে প্রশাসন। স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন যে ইউহানে আপাতত যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে সকলের ভালভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই নতুন করে হাসপাতাল তৈরির ভাবনা। যেমন ভাবা, তেমন কাজ।
ইউহানে প্রায় ১১ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। করোনা আতঙ্কে সর্বক্ষণ তটস্থ সকলে। সামান্য সর্দি-কাশি-জ্বর হলেও মারণ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করেছে, এই আতঙ্কে তাঁরা ছুটছেন হাসপাতালে। ফলে হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়ছে, টান পড়ছে ওষুধেও। চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী – সকলেই চূড়ান্ত ব্যস্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে। এসব দেখেই স্বাস্থ্য দপ্তর আরেকটি হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছে। চিনের সরকারি চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ২৫ বর্গ কিলোমিটার জায়গার উপর তৈরি হচ্ছে হাসপাতাল। যন্ত্রপাতি চালিয়ে দিনভর চলছে কাজ। এক হাজারটি শয্যা থাকবে এখানে। মাত্র ৬ দিনে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে প্রশাসন। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক জোয়ান কাউফম্যান জানিয়েছেন, ”এটা আসলে একটি পৃথক হাসপাতাল, যেখানে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত সন্দেহে যে কোনও রোগীকে পাঠানো হবে এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হবে, সতর্কতার সঙ্গে।”
তবে মারণ ব্যাধি মোকাবিলায় এমন তৎপরতার সঙ্গে হাসপাতাল তৈরি চিনে এই প্রথমবার নয়। এর আগে ২০০৩ সালে সার্স যখন মহামারীর আকার নিয়েছিল, তখনও বেজিং এই একইভাবে গড়ে উঠেছিল নতুন হাসপাতাল। যা অনেক উন্নত দেশেরই ভাবনার অতীত। চিনের উন্নত নির্মাণ সংস্থা, স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা এবং লাল ফিতের ফাঁস সংক্রান্ত জটিলতা প্রায় না থাকাতেই এত দ্রুত বড় প্রজেক্ট সম্পূর্ণ হতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সকলেই বলছেন, চিন দেখিয়ে দিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.