অবাঞ্ছিত আঁচিল থেকে মুক্তির পথ দেখালেন ফর্টিস হাসপাতালের ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. অনুশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথা শুনে লিপিবদ্ধ করলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়।
অবাঞ্ছিত, অযাচিত আঁচিল আগন্তুকের মতো গজিয়ে উঠতে পারে শরীরের যে কোনও জায়গায়। গলায়-ঘাড়ে-চোখের পাশে-বাহুমূলে এমনকী যৌনাঙ্গেও। চামড়ার উপর এই ‘এক্সট্রা গ্রোথ’ এমনিতে বিপজ্জনক না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে মাংসল এই উপবৃদ্ধি।
স্থূলরা সাবধান হোন
সাধারণত শরীরের ভাঁজে ভাঁজে বেশি হয়। আবার যাঁদের ওজন বেশি, যাঁরা স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। তার কারণ, স্থূলতা বেশি থাকলে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ঘটে। ডায়াবিটিস হয়। ডায়াবিটিস হলে শরীরে আঁচিল হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
কখন চিন্তার?
মাঝে মাঝে কিছু কিছু আঁচিলের রং বদলে যায়। একটু লাল হয়ে যায়, ইনফেকশন হয়। তখনই বিষয়টি উদ্বেগের। এছাড়াও অন্য ধরনের কিছু আঁচিল রয়েছে। দেখতে আঁচিলের মতোই লাগে, অন্তত প্রথমদিকে। তবে অনেক বছর ধরে থাকতে থাকতে, তার রং এবং আকারে পরিবর্তন দেখা দেয়। এটা ‘মেলানোমা’ হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, আমাদের দেশে মেলানোমা খুবই বিরল। আমাদের ‘জেনেটিক্যালি’ হওয়ার সম্ভাবনা সে অর্থে নেই।
আবার স্কিনের ক্যানসার বেসাল সেল কার্সেনোমা (বিসিসি) এক জায়গাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। এটি একটু বয়স্কদের ক্ষেত্রে, মুখে-গালের উপর দেখা যায়।
বদলের খেয়াল রাখুন
যদি দেখেন শরীরের কোনও আঁচিল অনেক বছর ধরে ছিল, কিন্তু সম্প্রতি (গত দু’তিন মাসের মধ্যে) তা আকারে বেড়েছে, রঙে বদল হয়েছে, রস বেরোচ্ছে তা হলে সতর্ক হোন। আগে কোনও একটা আঁচিল কালো রঙের ছিল, এখন কিছুটা বাদামি বা নীলচে লাগছে, বা ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে রক্ত চুঁইয়ে বেরোচ্ছে – এক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান। তাঁর পরামর্শ নিয়ে একটা ‘বায়োপসি’ করে জানুন, সেটা ‘ম্যালিগন্যান্ট’ কি না?
বিশেষ কোনও জায়গায়…
অনেক সময় আঁচিলের মতো উপবৃদ্ধি যৌনাঙ্গে দেখা যায়। দেখতে আঁচিলের মতো হলেও আসলে ‘স্কিন ওয়ার্ট’ হয়। কিছু বিশেষ ধরনের ‘ওয়ার্ট’ আছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। এই ভাইরাস যৌন সংসর্গ থেকে ছড়ায়। অবিলম্বে চিকিৎসা করাতে হবে। না হলে অনেক বছর পরে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ বলে এক ধরনের ম্যালিগনেন্সি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কেমন হবে চিকিৎসা
মূলত সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট। লেজার দিয়ে তুলে ফেলা হয়। ওষুধে খুব একটা কাজ হয় না। স্কিন ক্যানসার বলে নিশ্চিত হলে প্লাস্টিক সার্জনকে দিয়ে পুরোটা কেটে বাদ দিতে হবে। আঁচিল ‘ম্যালিগন্যান্ট’ না হলে ও ‘স্কিন ওয়ার্ট’ হলে ‘ইলেক্ট্রোকটারি’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে তুলে ফেলতে হবে। যৌনাঙ্গের ‘ওয়ার্ট’ও লেজার দিয়ে সরানো যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.