গৌতম ব্রহ্ম: করোনার কাঁটা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার অত্যন্ত শক্তিশালী হাতিয়ার আয়ুর্বেদ। আয়ুর্বেদ ভেষজই যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে করোনাকে দূরে রাখতে সক্ষম, তা এখন প্রশ্নতীত। ভারত ছাড়িয়ে তাই আয়ুর্বেদের সুখ্যাতি চলে গিয়েছে বিদেশেও। শ্রীলঙ্কার মতো দেশও করোনা রুখতে প্রাচীন এই শাস্ত্রেই বিশ্বাস রাখছেন। করোনার আবহে আপনিও নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন অতি অনায়াসে। জানালেন খোদ চিকিৎসক।
মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আয়ুশ মন্ত্রকের তরফে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। যেখানে আয়ুশ ক্বাথের উল্লেখ রয়েছে। আরও সহজ করে বলতে গেলে একে আয়ুর্বেদিক কাড়া বা পাচন বলা চলে। মাত্র দু’মিনিট খরচ করে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন এই ক্বাথ। আর সুস্থ থাকুন। সিনিয়র আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল অফিসার ডা. মধুমিতা মজুমদার সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে নিজেই এই ক্বাথ বানানো শিখিয়ে দিলেন। তবে তার আগে ধনেখালির গ্রামীণ হাসপাতালে কর্মরতা এই চিকিৎসক জানালেন ক্বাথ তৈরিতে যে উপকরণগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, তার গুণাগুণ।
প্রথমেই জানিয়ে দেওয়া যাক, ক্বাথটি তৈরি করতে লাগবে তুলসী পাতা, গোলমরিচ, দারচিনি, সুন্থি বা শুকনো আদা, কিসমিস, লেবু ও গুড়।
তুলসীর গুণাগুণ:
এটি শরীরের রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রদাহকেও রোধ করে। পাশাপাশি শ্বাসনালীকে প্রসারিত করে বায়ু চলাচলে সুবিধা করে দেয়। স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জিবীত করে। এর আরও একটা গুণ হল এটি চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। দুশ্চিন্তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। তাই তুলসী এক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী।
দারচিনির গুণাগুণ:
এর অন্যতম বিশেষ গুণ হল এটি রক্তে সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
সুন্থি বা শুকনো আদার গুণাগুণ:
আয়ুর্বেদের ভাষায় এটি বিশ্বভেষজ। পেশী-সহ শরীরের একাধিক যন্ত্রণা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শ্বাসনালীর পেশীকে শিথিল করে প্রসারণ করে। তাতে বায়ু চলাচলে সুবিধা হয়। ব্রঙ্কাইটিসের রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি বেশ উপকারী।
গোলমরিচের গুণাগুণ:
রান্নাঘরে মশলার রাজা গোলমরিচ। এর মধ্যে থাকা পাইপারিন শ্বেতকণিকা বৃদ্ধি করে। ফলে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। পাচনতন্ত্রে যে হাইড্রক্লোরিক অ্যাসিড থাকে, তার ক্ষরণ বাড়ায়। কোষ সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে। শ্বসনতন্ত্র ও পাচনতন্ত্রের কাজকেও স্বাভাবিক রাখে।
আয়ুর্বেদ ক্বাথ তৈরির প্রণালী:
গ্যাস জ্বেলে এক গ্লাস জল সসপ্যানে ঢেলে দিন। সেটি গরম হয়ে ফুটতে শুরু করলে ৮-১০টা তুলসী পাতা দিয়ে দিন। এরপর হাফ চামক সুন্থি বা শুকনো আদা দিয়ে দিন। হাফ চামচ দারচিনি দিয়ে দিন। দুই চিমটে গোলমরিচ দিন। ইচ্ছে হলে চার-পাঁচটি কিসমিস দিতে পারেন। এবার সসপ্যানটি একটি পাত্র দিয়ে চাপা দিয়ে দিন। এভাবেই দু-তিন মিনিট রাখুন। ছাঁকনি দিয়ে যেভাবে চা ছাঁকে সেভাবে ছেঁকে ক্বাথটি কাপে ঢেলে নিন। এবার স্বাদ অনুসারে তাতে লেবু চিপে দিন অথবা এক টুকরো গুড় মিশিয়ে দিন। চাইলে দুটো একসঙ্গেও মেশাতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.