সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লালারস বা শরীরের অন্য কোনও জলকণা (Fluid) থেকে সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যেহেতু নোভেল করোনা ভাইরাস (Novel Coronavirus) জলকণাবাহিত, তাই এই সতর্কতা। তবে একটি সুইস সংস্থা এমন একটি মাস্ক তৈরি করেছে যা প্রকৃত অর্থেই সুরক্ষা বর্ম, মাস্কটি জীবাণুর সক্রিয়তা নষ্ট করে দেয়। এমন চমকপ্রদ মাস্ক তৈরি করে পেটেন্ট পাওয়ার পর সম্প্রতি বিশ্বের বাজারে তা এসেছে। ভারতস-সহ বেশ কয়েকটি দেশ তার ক্রেতা। আর এই কীর্তির নেপথ্যে রয়েছেন এক ভারতীয়। সুইজারল্যান্ডের ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জীব স্বামী।
ফেস মাস্কের কাছাকাছি এলেই ভাইরাসের সমস্ত জারিজুরি শেষ। সুইস সংস্থা লিভিংগার্ড টেকনোলজি এমনই একটি মাস্ক তৈরি করেছে। বলা হচ্ছে, যে কোনও ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ৯৯.৯ শতাংশ রুখে দেবে। এমনকী সাম্প্রতিক নোভেল করোনা ভাইরাসের দৌরাত্ম্যও রুখে যাবে এই মাস্কে। এর নেপথ্যে রয়েছেন জার্মানির বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। সেখানকার স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ গবেষণা চালিয়ে দেখেছে, এক ধরনের কাপড়ের টুকরো বিশেষভাবে বানিয়ে ব্যবহার করলে তা চারপাশের ভাইরাস নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। এরপর তাঁরা যোগাযোগ করেন সঞ্জীব স্বামীর সংস্থা লিভিংগার্ড টেকনোলজিস-এর সঙ্গে। ওই সংস্থার সহযোগিতায় তৈরি হয়েছে নতুন ফেস মাস্কটি।
তবে তা বাজারে আনার কাজ বিশেষ সহজ ছিল না। ১০০টিরও বেশি পেটেন্ট এবং অন্তত ৬৫ হাজার পরীক্ষার পর তবেই মাস্ক বাজারে আনার সম্মতি পেয়েছে সংস্থাটি। বুধবার ভারত-সহ কয়েকটি দেশের বাজারে তা এসেছে। এই মাস্কের সুবিধা আপাতত পাবে জাপান, জার্মানি, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কয়েকটি দেশের নাগরিকরা। প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জীব স্বামীর কথায়, ”আমরা ভেবেছি, কীভাবে আরও উন্নত মাস্ক তৈরি করে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ঝুঁকি কমানো যায়। সেই লক্ষ্যেই বার্লিনের ফ্রি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আমরাও শামিল হয়েছি। আর ভারতের মতো দেশে মাস্ক দিতে পেরে আমার ব্যক্তিগতভাবে খুব ভাল লাগছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশেও আমরা মাস্ক দিতে পেরেছি।”
এই মাস্ক পরিবেশবান্ধব। সংস্থা তরফে জানা গিয়েছে, মাস্ক তৈরিতে যে কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে, তা অতি সূক্ষ্ম ফাইবারের। তাতে ন্যানোটেকনোলজি প্রয়োগ করে কিছু আয়ন দেওয়া আছে। এই আয়ন বায়ুমণ্ডলের যে কোনও জীবাণুকে মেরে ফেলতে সক্ষম। আর মাস্কে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধাতব পদার্থ ত্বকের জন্যও নিরাপদ। তাই এই মাস্ক মোটের উপর আরামদায়ক। ধুয়ে পরাও যাবে। সাধারণ মাস্কের চেয়ে অন্তত ২০০ গুণ ভাল বলে দাবি নির্মাতাদের। তবে দামের বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। ভারতের মতো দেশে কতজন এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.