ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: দুই পা আর কোমরের সংযোগস্থল। চিকিৎসা পরিভাষায় যে অংশকে বলা হয় ‘হিপ’। সেখানেই অসহ্য ব্যথা। হাঁটাচলা করতে পারছেন না। উঠতে বসতেই এক ঘণ্টা। ব্যথা সহ্য করে দিন কাটানো নয়। টপাটপ তা বদলে ফেলছে বাঙালি। করোনা আবহে হিপ রিপ্লেসমেন্ট (Hip replacement) বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। বাড়িতে শুয়ে বসে আর্থ্রাইটিস (Arthritis) আঁকড়ে ধরছে যে অনেককেই।
পূর্ব ভারতে ইতিমধ্যেই শহর কলকাতা রেকর্ড স্থাপন করেছে। সিঙ্গল সিটিংয়ে পনেরোটি নিতম্বের হাড় বদলেছেন ডা. সন্তোষ কুমার। যে তালিকায় রয়েছেন নদিয়ার শান্তিপুরের কৃষ্ণ চৌধুরি (২৫), দমদম নাগেরবাজারের গৌরীপ্রসাদ মজুমদার (৭০)। দুজনেই জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ। দিব্যি হাঁটাচলা করতে পারছেন। শুধু বেসরকারি নয়, সরকারি ক্ষেত্রেও হিপ রিপ্লেসমেন্ট বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
কোমরে ব্যথার মূল কারণ আর্থ্রাইটিস। এই আর্থ্রাইটিসের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস। কোমরে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে রোগীর এক বিশেষ পরীক্ষা করা হয়। যে পরীক্ষার নাম এইচএলএ-বি২৭। পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলেই ধরে নেওয়া হয়, রোগী অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিসের শিকার। অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিসে শুয়ে-বসে থাকা বারণ। কিন্তু লকডাউনে সারাদিন ঘরে বসেই কাটছে দিন। চাকরিরতরাও ওয়ার্ক ফ্রম হোমের চক্করে ঘরে বসে পড়েছেন। তা থেকেই থাবা বসাচ্ছে নিতম্বের ব্যথা।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম ভট্টাচার্যর কথায় আর্থ্রাইটিসে বন্ধনীর রেঞ্জ অফ মোশন কমে যায়। ঘাড়, বুক আর কোমরের অংশের মেরুদণ্ডের কশেরুকা জুড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা একদম কমে যায়। উঠতে-বসতে পারেন না রোগী। আক্রান্ত হয় হিপ জয়েন্টও। চলতে অসুবিধা হয়। আর্থ্রাইটিস যাতে বাসা না বাঁধে শরীরে সে কারণে শরীর সচল রাখাটা প্রয়োজন।
অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে গেলে বদলাতেই হয় ‘হিপ’ অথবা পায়ের সঙ্গে কোমরের সংযোগকারী হাড়। হিপ রিপ্লেসমেন্ট সাধারণত দু’ প্রকার। অল্পবয়সিদের যে হিপ রিপ্লেসমেন্ট হয় তা ‘আনসিমেন্টেড’, বয়স্কদের ক্ষেত্রে তা ‘সিমেন্টেড।’ ব্যথা সহ্য করেই যাঁরা ঘরে বসে রয়েছেন তাঁদের অভয় দিয়েছেন চিকিৎসক। নিতম্বের হাড় বদলে কতদিন হাঁটাচলা করব?
ডা. সন্তোষ কুমার জানিয়েছেন, ‘আনসিমেন্টেড হিপ রিপ্লেসমেন্ট’ করে ৫০ বছর দিব্যি কাটিয়ে দেওয়া যায়। বেসরকারি ক্ষেত্রে নিতম্ব বদলের খরচ কত? দুটো একসঙ্গে বদল করতে খরচ আড়াই লক্ষ টাকা। একটা একটা করে বদলাতে খরচ প্রতি হিপের জন্য এক লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা। ডা. সন্তোষ কুমার জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী স্কিমেও হচ্ছে অস্ত্রোপচার। ফলে ব্যথা না পুষে অনেকেই বদলে নিচ্ছেন হিপ জয়েন্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.