ফুসফুসের প্রতি যত্নশীল হোন। কিছু অভ্যাস ও যোগাভ্যাসই চাবিকাঠি। বললেন ইন্ডিয়ান যোগ অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ দপ্তরের সেক্রেটারি ডা. অভিজিৎ ঘোষ। শুনলেন সোমা মজুমদার।
কোমরবিডিটি আর কোভিডের সম্পর্ক যে নিবিড় তা এখন সবার জানা। তাই এই রোগীরা বেশি সতর্ক, অন্যদিকে আতঙ্কিতও বেশি। আসলে করোনা ভাইরাস সর্বপ্রথম আঘাত হানছে গলায়, তারপর সেখান থেকে হার্ট, ফুসফুসে প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে চিকিৎসকের এক অংশের দাবি, শুধু হার্ট বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রেই নয়, কোভিড ১৯ আক্রান্ত সাধারণ মানুষেও ফুসফুসে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তাই সকলের ক্ষেত্রেই ফুসফুস ও হার্ট খুব শক্তিশালী রাখা জরুরি। তার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় কী জানেন? শুধুমাত্র প্রয়োজন নিয়মিত ব্যায়াম ও কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস রপ্ত করা।
১) ধীরে ধীরে ঠোঁট বন্ধ রেখে নাক দিয়ে নিশ্বাস নিতে হবে। ১-৫ গুনে তার পর নাক বন্ধ করে ঠোঁট দিয়ে ফুঁ দেওয়ার মতো করে নিশ্বাস ছাড়ুন। একইভাবে নাক বন্ধ রেখে ফুঁ দেওয়ার মতো করে মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে আবার ১-৫ গুনে শ্বাস আটকে রেখে নাক দিয়ে ছাড়তে হবে। এইভাবে দিনে দু’বার, ১০ বার করে অভ্যাস করলে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে।
২) ভুজঙ্গাসন করা যেতে পারে তবে এই আসনটি করার সময় শ্বাস ছাড়া ও নেওয়ার প্রক্রিয়াটি ঠিক মতো মানলে তবেই তা ফুসফুসের জন্য উপকারী। এছাড়াও কিছু পরিচিত প্রাণায়াম যেমন কপালভাতি, অনুলোম-বিলোম, ভ্রমরী, ভ্রস্ত্রিকা এবং ওং চ্যান্টিং নিয়মিত করলে অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে।
৩) প্রতিদিন হাঁটলেও ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকবে। পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। ফুসফুস ভাল রাখতে বেলুন ফোলানো, বাড়িতে দুবেলা শাঁখ বাজাতে পারেন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্বারা ফুসফুসের কার্যকারিতা ঠিক রাখা সম্ভব।
৪) সপ্তাহে এক-দু’দিন দমন ধৌতি করা যেতে পারে। সকালে খালি পেটে ঈষৎ উষ্ণ গরম জলে এক চামচ লবণ দিয়ে পেট ভরে পান করুন। এরপর গলায় আঙুল দিয়ে বমি করুন। এটি পেট পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসকেও শোধন করে। এটা করার পরে দশ মিনিট শবাসন করতে হবে।
৫) নিশ্বাস ছেড়ে মেরুদণ্ডকে উপরের দিকে গোলাকৃতি করতে হবে এবং পেটকে চেপে ধরে পেট দিয়ে মেরুদণ্ডকে উঁচু করতে হবে। থুতনিকে বুকের কাছে আনতে হবে এবং ঘাড়কে রিল্যাক্স করতে হবে। এরপর নিশ্বাস নিতে নিতে পেট রিল্যাক্স করে পিঠকে ধনুকাকৃতি করতে হবে। দাঁড়িয়ে সামনে দুটি হাত জোড়া করে নিশ্বাস নেওয়ার সঙ্গে হাত দুটিকে মেলে দিতে হবে। আবার নিশ্বাস ছাড়ার সঙ্গে হাত দু’টিকে জোড়া করতে হবে।
৬) একটা চেয়ার নিয়ে তার সামনে মাটিতে বসে পা ছড়িয়ে দিন। যেন চেয়ারের নিচে পা ছড়াতে পারেন ও হাত দু’টি চেয়ারের বসার জায়গায় রাখুন। এবার শ্বাস নিতে নিতে মাথাকে পিছনের দিকে হেলাতে হবে এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা সামনের দিকে নিয়ে আসতে হবে। মাথা সামনের দিকে আনার সময় মুখে ‘আ…’ আওয়াজ করতে থাকতে হবে। আর থুতনি কলার বোনের কাছে আসবে। এইভাবে অন্তত ৫-৬ রাউন্ড করতে হবে।
রোজকার হাজার একটা কাজের মাঝখানেই এই কাজগুলি করতে পারেন। যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলার করার জন্য আপনার শরীর তৈরি থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.