ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: রিপোর্ট নেগেটিভ। কিন্তু আসলে রোগী করোনা (Coronavirus) পজিটিভ। একটা দু’টো নয়। এমনটা হচ্ছে ভুড়ি ভুড়ি। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তাই ভরসা নেই। করাতে হবে সিটি স্ক্যান।
ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ তথা ন্যাশনাল অ্যালার্জি অ্যাজমা ব্রঙ্কাইটিস ইনস্টিটিউটের সম্পাদক ডা. অলোক গোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, সিটি স্ক্যান অনেক সূক্ষ্ম বিচার করতে সক্ষম। অনেক ক্ষেত্রেই এখন আরটিপিসিআর করোনা ধরতে পারছে না। সেক্ষেত্রে সিটি স্ক্যানে তা ধরা পরছে। করোনা ভাইরাসের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে। সিটি স্ক্যানে যদি দেখা যায় রোগীর বুকে ওই ধরণের বৈশিষ্ট বিদ্যমান, তড়িঘড়ি তাঁকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে মাল্টি-ভিটামিন, জিঙ্ক ট্যাবলেট খাওয়ার নিদান দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট (আরএটি) অথবা আরটিপিসিআর টেস্ট, এতদিন এই দুইই ছিল করোনা ধরার অস্ত্র। নতুন স্ট্রেনে আর তেমনটা নয়। দেখা যাচ্ছে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বাড়ি গিয়ে ফের জ্বর এসেছে রোগীর। ইতিমধ্যেই গুজরাটে এমন অসংখ্য রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। খোঁজ মিলেছে তিলোত্তমাতেও।
চিকিৎসকরা বলছেন, আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও কাশি কমছে না। দম নিতে পারছিলেন না রোগী। সিটি স্ক্যান করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ফুসফুসে গভীর সংক্রমণ। সে কারণেই চিকিৎসকরা অনেক সময় একইসঙ্গে আরটিপিসিআর আর সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে অনেকেরই সিটি স্ক্যান করার সামর্থ্য নেই। ডা. অলোক গোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, এমন ক্ষেত্রে দু’বার আরটিপিসিআর টেস্ট করতে হবে রোগীকে। রোগীর যদি জ্বর আসে, তাহলে জ্বর আসার দিন থেকে পাঁচদিন পর দ্বিতীয়বার আরটিপিসিআর টেস্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. আলোক গোপাল ঘোষাল। তবে সবার আগে বুঝতে হবে করোনা হয়েছে না হয়নি? ডা. ঘোষালের কথায়, সিটি স্ক্যান করে যদি দেখা যায় রোগীর বুকে জল জমেছে সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে রোগীর করোনা হয়নি। কিম্বা রোগীর যদি নাক দিয়ে প্রচণ্ড জল পরতে থাকে তাহলেও তা সাধারণ ফ্লু। কিন্তু বুকে যদি প্যারিফেরাল প্যাচ দেখা যায় তবেই নিশ্চিত করোনা আঁকড়ে ধরেছে ফুসফুস।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনার নতুন স্ট্রেইন এমনই যে আরটিপিসিআরে কিছুই ধরা পরছে না। এইচআরসিটি বা হাই রেসোলিউশন কম্পিউটেড টোমোগ্রাফিতেই ধরা পরছে ফুসফুসের দুরবস্থা। এদিকে আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় করোনা চিকিৎসার খরচ দিচ্ছিল না স্বাস্থ্যবীমা। সমস্যা রয়েছে আরও। আইসিএমআর প্রোটোকল অনুযায়ী আরটিপিসিআর রিপোর্ট পজিটিভ না এলে রোগীকে রেমডেসেভির দেওয়া সম্ভব নয়। “তা না হোক। অন্তত সিটিস্ক্যানে রোগীর বুকে পেরিফেরাল প্যাচ দেখা গেলে আমরা হোম আইসোলেশনে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তাতে অসুখটা অন্য কারও ছড়াবে না।” জানিয়েছেন ডা. ঘোষাল।
এতদিন শুধুমাত্র আরটিপিসিআরে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এলে তবেই এইচআরসিটি স্ক্যান করে দেখে নেওয়া হতো ফুসফুস কতটা জখম হয়েছে। সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হীতেন কেরালিয়া জানিয়েছেন, এখন একই সঙ্গে দুটি টেস্ট করতে বলা হচ্ছে। আরটিপিসিআর এর সেন্সিভিটি ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে ফলস নেগেটিভ রিপোর্ট আসার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.